ঢাকা: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে। উপার্জন না করেও সেখানে তার চোখ-ধাঁধানো বিলাসী জীবন।
সূত্র বলছে, লন্ডনে পলাতক সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের অর্থ সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। শিগগিরই বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আলাদাভাবে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করবে।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এর মধ্যে লন্ডনে বাঙালি রেস্টুরেন্টের মালিক ও বাংলাদেশে অবস্থান করা তাদের আত্মীয়-স্বজনের বিষয়ে বিশেষভাবে তদন্ত করা হবে। তদন্তে তারেক রহমানকে অর্থ সরবরাহের কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাব দ্রুত তলব এবং জব্দ করা হবে বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুযায়ী, লন্ডনে বিভিন্ন বাঙালি রেস্টুরেন্টের মালিকরা তারেক রহমানকে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে বেশিসংখ্যক ব্যবসায়ীর বাড়ি আবার সিলেটে। সিলেটি এসব ব্যবসায়ী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে লন্ডনে তারেক রহমানের কাছে।
বিভিন্ন সংস্থার একাধিক তদন্ত কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তারেক রহমান আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার অর্থের জোগানদাতা ও পাচারকারীদের পুরো চেইন নিয়ে এবার আমরা কাজ করব। দেশে ও বিদেশে বসে যারা টাকা পাচার করছেন ও তারেক রহমানকে টাকা দিচ্ছেন, পুরো চক্রকেই এবার আইনের আওতায় আনা হবে। ’
তারা বলেন, ‘আমরা সিলেটভিত্তিক লন্ডনে রেস্টুরেন্ট ও অন্য ব্যবসায়ীদের নথিপত্র হাতে নিয়ে কাজ শুরু করব। বাংলাদেশে অবস্থান করা তাদের আত্মীয়-স্বজনও নজরদারিতে থাকবেন। কারণ বাংলাদেশ থেকে যারা তারেক রহমানকে টাকা পাঠান তারা ওই সব ব্যবসায়ীর বাংলাদেশে অবস্থান করা আত্মীয়-স্বজনের কাছে টাকা পৌঁছে দেন। পরে সেই টাকা হয় লন্ডন থেকে ওই ব্যবসায়ী তারেক রহমানকে দিয়ে দেন, নতুবা কৌশলে দেশ থেকে পাচার করেন তারা। দ্রুতই তারেক রহমানের অবৈধ অর্থের জোগানদাতাদের পুরো চেইন উন্মোচন হবে ও জড়িতদের ব্যাংক হিসাব জব্দসহ আইনের আওতায় আনব আমরা। ’
এর আগে তারেক রহমানের অন্যতম অর্থদাতা হিসেবে বিএনপির নির্বাহী সদস্য তাবিথ আউয়ালের নাম আসে। এই অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করে।
দুদক সূত্র জানায়, তাবিথের পর অন্তত ১০ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে লন্ডনে অবৈধ অর্থপাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর বাড়ি সিলেটে।
প্রসঙ্গত, লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান ২০১৮ সাল থেকে পরিবার নিয়ে উচ্চাভিলাষী জীবন যাপন করে আসছেন। যদিও তিনি কোনো কিছুই করেন না সেখানে। তার ও পরিবারের উচ্চাভিলাষী জীবনের যাবতীয় অর্থের জোগান দিচ্ছে একটি চক্র। এই চক্রের বেশির ভাগ সদস্যের বাড়ি সিলেটে। এবার তাই সিলেটকে অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করবে বিভিন্ন সংস্থা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
নিউজ ডেস্ক