ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সন্ত্রাসী ইয়াছিন হত্যাকাণ্ড: দুই ভাইসহ বেশ কয়েকজন আটক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২
সন্ত্রাসী ইয়াছিন হত্যাকাণ্ড: দুই ভাইসহ বেশ কয়েকজন আটক

যশোর: যশোরে আলোচিত সন্ত্রাসী ইয়াছিন আরাফাত ওরফে হুজুর ইয়াছিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ভাইসহ বেশ কয়েকজন আটক হয়েছে। তবে, কারা আটক হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে পুলিশ কিংবা র‌্যাব তাদের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছে না।

ডিবি পুলিশ বলছে, তাদের অগ্রগতি বেশ এগিয়েছে। মামলা হওয়ার পর তারা বিষয়টি মিডিয়াকে জানাবে।

অপরদিকে র‌্যাব বলছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তারা চারজনকে ক্যাম্পে নিয়ে গেছে।

যশোর পুলিশের মুখপাত্র ইন্সপেক্টর রুপন কুমার সরকার জানান, যশোর ডিবি পুলিশ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে অভিযান চালিয়ে খুলনার শিরোমনি এলাকার বেসরকারি হাসপাতাল লিন্ডা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক থেকে দুইজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন-যশোর শহরের বেজপাড়ার তোরাব আলীর ছেলে রানা (৩৮) ও রুবেল (৩৫)।

এক প্রশ্নের জবাবে ইন্সপেক্টর রুপন কুমার সরকার বলেন, আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে এনেছি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামতও জব্দ করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর বিষয়টি আমরা মিডিয়াকে অবহিত করবো।

একইদিন বেলা ১১টার দিকে যশোর শহরের চোরমারাদিঘী এলাকা থেকে নিশান (২৮) নামের এক যুবককে আটক করে র‌্যাব সদস্যরা। নিশান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাহউদ্দিন কবির পিয়াসের বাড়ির সামনে অবস্থান করছিলেন।  

র‌্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার নাজিউর রহমান বলেন, ‘ইয়াছিন আরাফাত হত্যার ঘটনায় নিশান নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াসের বাড়ির সামনে থেকে তাকে তুলে আনা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও তিনজনকে ক্যাম্পে আনা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের শনাক্ত করা যাবে।

যোগাযোগ করা হলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এখনও (বিকেল সাড়ে ৫টা) মামলা হয়নি। সন্ধ্যার পরে হতে পারে। নিহত ইয়াছিনের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে ১০টি মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।

শহরে ছাত্রলীগ সভাপতি আটকের গুজব

বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরে গুজব রটে যায়, ইয়াছিন আরাফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে র‌্যাব সদস্যরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াসকে আটক করেছে। তবে, ছাত্রলীগ সভাপতি ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।

একটি সূত্র জানায়, আজ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের শংকরপুর চোরমারাদিঘীর পাড় এলাকায় পিয়াসের বাড়ি থেকেই নিশানকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় র‌্যাব সদস্যদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন পিয়াস। তখন র‌্যাব সদস্যরা তাকেও ক্যাম্পে তুলে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস বলেন, বেলা ১১টার দিকে তার বাড়ির সামনে থেকে নিশানকে আটক করে র‌্যাব। তিনি বিষয়টি জানতে চাইলে র‌্যাব সদস্যরা তাকে ক্যাম্পে যেতে অনুরোধ করেন। এরপর তিনি ক্যাম্পে যান এবং সেখানে তাদের সঙ্গে প্রায় আধাঘণ্টা হত্যাকাণ্ড বিষয়ে কথা বলেন। এরপর তিনি বাসায় চলে আসেন।  

তাকে আটকের খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‌‘এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। ’ 

যোগাযোগ করা হলে র‌্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার নাজিউর রহমান বলেন, নিশানকে আটকের পর পিয়াসকে আমরা ক্যাম্পে আসতে বলি চা পানের জন্যে। কিছুক্ষণ তার সঙ্গে কথা বলি। এরপর তিনি বাড়ি চলে যান।  

প্রসঙ্গত, বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৮টার দিকে যশোর শহরের বেজপাড়া আকবরের মোড় এলাকায় একটি ক্লাবের মধ্যে খুন হন ইয়াছিন আরাফাত। তিনি বেজপাড়া আনসার ক্যাম্প (পানির ট্যাঙ্কির পাশে) এলাকার মাওলানা মনিরুজ্জামানের ছেলে। নিহত ইয়াছিনের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

যশোরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সন্ত্রাসী ইয়াসিন খুন

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রয়ারি ১৮, ২০২২
ইউজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।