ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিদ্যুৎ খাতে চুরি-দুর্নীতির বিচার করতে হবে: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
বিদ্যুৎ খাতে চুরি-দুর্নীতির বিচার করতে হবে: সাকি

ঢাকা: বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট ও দুর্নীতির প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা মহানগরের (উত্তর ও দক্ষিণ) আয়োজনে হারিকেন হাতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৭ জুলাই) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ানের সভাপতিত্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি।

তিনি বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটে আছে। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে—একথা সরকার নিজেই বলছে। ক’দিন আগেই মহাসমারোহে শতভাগ বিদ্যুতায়নের অনুষ্ঠান করা হলো। আর এখন সরকারই বলছে—হারিকেন জ্বালাও, কুপি জ্বালাও। সরকারের ঘোষণার আগেই লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে। সরকার বলছে, সুসম লোডশেডিং আর গ্রামে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত। যারা দেশের অর্থনীতি চালান তারাই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। ইতোমধ্যে সারকারখানাগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ২০০৯ সালে সরকার ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের সংকট ও বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে লুটপাটের আয়োজন গড়ে তোলা হলো। দ্রুত সমাধানের কথা বলে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলো। ২০১৪ সাল পর্যন্ত চলার কথা ছিল। এখন ২০২২ সাল পর্যন্তও এগুলো চলছে এবং আবারও নবায়ন করা হচ্ছে। তাদের বসিয়ে বসিয়ে গত ১২ বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে এবং লুট করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৩ বছর সরকার ক্ষমতায় আছে কিন্তু দেশের মজুদ থেকে এক ইউনিট গ্যাসও উত্তোলন করতে পারেনি। বরং লুটপাটের সুযোগ তৈরির জন্য পুরো বিদ্যুৎখাতকে আমদানি নির্ভর করে ফেলা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতকে অনিরাপদ করার সাথে সাথে শিল্প, কৃষি ও পুরো অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। সরকার চুরি, দুর্নীতি ও লুটপাট করে পুরো রিজার্ভ খালি করে ফেলেছে। এখন তেল-গ্যাস-ফর্নেস অয়েল আমদানি করে এর ব্যয় মেটানোর সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।


হারিকেন হাতে নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল

জোনায়েদ সাকি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে সরকারের কোনো অগ্রাধিকার নেই। সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে ভারতের স্বার্থে। আমরা এর বিরোধিতা করে বলেছিলাম, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোযোগ দিতে হবে আমাদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করার জন্য। কিন্তু সরকার সেদিকে হাটে নাই; বরং নগদ লুটপাটের আয়োজনের দিকে নজর তাদের।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দায় মুক্তি আইন বাতিল করে স্বাধীন জাতীয় কমিশন গঠন করে বিদ্যুৎ খাতে চুরি দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার করতে হবে। এরা তা করবে না। এজন্য এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে এই বিচার সম্পন্ন করতে হবে।

বিদ্যুৎ নিয়ে লুটপাট ও দুর্নীতির প্রতিবাদে আগামী ১০ আগস্ট জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়ে সাকি।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য শ্রমিকনেতা তাসলিমা আখ্‌তার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, ঢাকা জেলা সদস্য সচিব মিজানুর রহমানসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিভিন্ন থানা ইউনিটের নেতারা। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।