ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সংখ্যলঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে তারা ভারতকে বার্তা দিতে চায়: কাদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২২
সংখ্যলঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে তারা ভারতকে বার্তা দিতে চায়: কাদের

ঢাকা: দুর্বৃত্তরা নির্বাচন সামনে রেখে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা চালিয়ে ভারত সরকারকে মেসেজ দিতে চায় যে আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ না, এমন অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার (২ অক্টোবর) রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় তিনি এ অভিযোগ করেন।

 

এ সময় ওবায়দুল কাদের হিন্দু ধর্মালম্বীদের অভয় দিয়ে বলেন, আপনারা ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা সতর্ক আছে, আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমি দেশের বিরোধী যারা আছে, তাদেরকেও আহ্বান জানাব, আগামী ১৪ মাস পরে নির্বাচন। এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি অশুভ চক্র আছে। যারা হিন্দুদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ভারত সরকারকে জানিয়ে দিতে চায়- এ কাজটা আওয়ামী লীগ করেছে। আওয়ামী লীগের হাতে মাইনোরিটি নিরাপদ নয়- এটা মেসেজ দিতে চায়। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চান, শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম-কর্ম করতে দিন। সংলাপ করছেন করুন। এটা আপনাদের নিজেদের ব্যাপার। কিন্তু আমি বলব দুর্গোৎসব- দশমী পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দল- আপনাদেরও ভূমিকা আছে। আপনারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। রাজনীতিও করবো। কিন্তু আমরা এই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবে সহযোগিতাও করব।

এ অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার সরকার একাধারে ১৩ বছর ক্ষমতার মঞ্চে আসীন আছে। এই ১৩ বছরে ১৩টি দুর্গাপূজা হয়েছে। ৩০ হাজার পুজামণ্ডপ হয়েছে। এবার ৩২ হাজারের বেশি পূজা মণ্ডপ। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, এই ১৩ বছরে মাত্র একটিবার দুর্গাপূজা সহিংসতার টার্গেট হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার টার্গেট হয়েছে। দুর্বৃত্তদের টার্গেট হয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের বাড়িঘর টার্গেট হয়েছে। মন্দির টার্গেট হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি দোকানপাটে পর্যন্ত হামলা হয়েছে। হামলা হয়েছে, উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি বলতে চাই, একাধারে ১১টি দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে হয়েছে। কোনো শান্তি বিনষ্ট হয়নি। কিন্তু গতবার দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটনা ঘটে গেছে।

গত বছর দুর্গাপূজায় হামলার প্রসঙ্গ ওবায়দুল কাদের বলেন, ১১ বছর যখন শান্তিপূর্ণ হয়েছে তাতে এবারও শান্তিপূর্ণ হবে- এরকম চিন্তা ভাবনা থেকে সতর্কতার কিছুটা অভাব ছিল। কোথাও কোথাও রাজনৈতিকভাবে আমরা অসতর্ক ছিলাম, এ কথা সত্য। চৌমুহনী ছিলো ভয়াবহ অবস্থা। একাত্তরের বর্বরতাকেও হার মানায়। আমি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলছি, সারা বাংলায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রস্তুত আছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আছে। তাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সক্রিয় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

সনাতন ধর্মালম্বীদের উদ্দেশ্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনারা কোন চিন্তা করবেন না। আজকে সপ্তমী কালকে অষ্টমী- কুমারী পূজা। এখনও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার। দুর্গাপূজাটা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে মণ্ডপ পরিদর্শনে এসেছি।  

তিনি বলেন, যারা আপনাদের ওপর হামলা চালায়। তারা কোনো দলের নয়। তারা দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তরা যে দলেরই হোক- তাদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে। তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। বিচার না হলে প্রশ্রয় পাবে। তাদের ব্যাপারে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। আজকে পূজা কমিটি আমাকে বলেছে বিচার হয় না। কেন বিচার হবে না? বাংলাদেশের সব অপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা করেছেন। এমনকি নিজের দলের লোকেরাও রেহাই পায়নি।  

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এবং প্রথানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্য দেন।  

উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ মহানগর নেতৃবৃন্দ ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২২
এসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।