ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে এ থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল জানান, ১৭ অক্টোবর সোমবার রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভারচ্যুয়াল সভা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন, ২০২২ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন এবং এই সেবা নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্তে তীব্র সমালোচনা করা হয়। সভা মনে করে এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অযৌক্তিক এবং জনগণকে রাজনৈতিক কারণে হয়রানি এবং নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা রয়েছে। সভা এই সিদ্ধান্তকে আপত্তিকর বলে মনে করে। অযৌক্তিক, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক, বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী এসব সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়।
সভায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি, অন্তবর্তীকালীন সময়ে দল নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট গঠন ও আন্দোলনকারী সব দলের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠন, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধি এবং আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের গুলিতে আব্দুর রহিম, নূরে আলম, শাওন, শহিদুল ইসলাম শাওন, আব্দুল আলিমের হত্যা, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ও পুলিশের হামলা এবং মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভা মনে করে বর্তমানে অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় অনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য পুনরায় দমননীতি গ্রহণ করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে জনগণের যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে সরকারের সব নির্যাতনকে পরাজিত করে জনগণের বিজয় অর্জিত হবে। সভায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস, পুলিশের হামলা, গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এবং গ্রেফতারদের মুক্তির দাবিতে আগামী ২০ অক্টোবর খুলনা বিভাগ ছাড়া অন্য সব মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হবে। সভায়, গাজীপুর মহানগরের আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনসহ কয়েক জন নেতা-কর্মীর জামিন বাতিল করায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। মিথ্যা মামলায় উচ্চ আদালত হতে জামিন দেওয়ার পরেও নিন্ম আদালতে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে অনির্বাচিত সরকারের নির্দেশে আদালতের এসব নির্দেশ গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিপন্থী। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই ধরনের বেআইনী কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
সভায়, আগামী ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালনের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
এমএইচ/এসএ