নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে বংশ পরম্পরায় তৈরি হয়ে আসছে একটি অনন্য খাদ্যপণ্য চ্যাপা শুঁটকি। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘হিদল’ নামেও পরিচিত।
জেলার বারহাট্টা উপজেলার চরসিংধা ও মোহনগঞ্জ উপজেলার শুঁটকি মহলে সবচেয়ে বেশি চ্যাপা শুঁটকি উৎপাদিত হয়। এখানকার জেলেরা এবং কারিগররা সনাতন পদ্ধতিতে মাছ প্রক্রিয়াজাত করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
তাজা পুঁটিমাছ সংগ্রহ করে ভালোভাবে পরিষ্কার করে শুকিয়ে পরিশোধিত তেলে ভেজানো মাটির মটকায় চেপে চেপে ভরে পলিথিন ও নদীর মাটি দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়। কিছুদিন পরেই তৈরি হয় চ্যাপা শুঁটকি।
কারিগরদের জানান, প্রতি মটকা ভরার জন্য তারা মাত্র ২০০ টাকা পারিশ্রমিক পান, যা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। সরকারি সহায়তা পেলে তারা আরও ভালোভাবে তাদের জীবনযাপন করতে পারতেন বলে জানান।
শুঁটকি ব্যবসায়ীরাও জানান, ঢাকাসহ সারাদেশে এই শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে বিক্রি বেড়ে যায় এই শুঁটকির। তবে পুঁজি সংকট ও বাজারে অধিক বাকির কারণে তারা বড় পরিসরে ব্যবসা করতে পারছেন না।
স্থানীয় ভোক্তারা বলছেন, হাওরের তাজা মাছ দিয়ে তৈরি চ্যাপা শুঁটকির স্বাদ অতুলনীয় হলেও এখন এটি অনেক ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। আগে গরিবের খাদ্য হিসেবে পরিচিত শুঁটকি এখন ধীরে ধীরে ধনীদের খাদ্য তালিকায় চলে গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাহান কবির জানান, চ্যাপা শুঁটকি কারিগরদের স্বাস্থ্যসম্মত উৎপাদন পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এসময় তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৫
আরএ