নোয়াখালী: সব প্রস্তুতি সম্পন্ন আর তিন পর ২ মে সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ইয়াছিন আরাফাত শাকিলের (২৮)। কিন্তু সন্ত্রাসীদের গুলিতে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৮টা দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানি ইউনিয়নের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামীয়া মার্কেটের সামনে একজনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে। এতে মৃত্যু হয় শাকিলের।
এ ঘটনায় তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুইজনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং আরেকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের খোকনের ছেলে মোরশেদ আলম (২৫), একই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. জীবন (২৪) ও মো. মনির (২২)।
নিহতের স্বজনরা জানায়, কিছুদিন আগে শাকিল সৌদি আরব যাওয়ার জন্য ঢাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে আসে। জীবিকার তাগিদে আগামী মাসের ২ মে তার সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট ছিল। তার ৭ মাস বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। এক তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে পুরো পরিবারের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। নিহতের স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই অ্যালুমিনিয়াম মিস্ত্রি ছিলেন। পাশাপাশি তিনি একটি চা দোকান করতেন। এছাড়াও তিনি ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী ছিলেন।
প্রসঙ্গত, স্থানীয়রা জানায় সোমবার রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানির গঙ্গাবর বাজারের ইসলামীয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা পান করছিলেন। ওই সময় এলাকায় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় করে পাঁচজন অস্ত্রধারী এসে লাবিব নামে এক তরুণকে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরও কয়েকজন তাদের বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। এ সময় তার ছোট ভাই শুভকেও (২৫) কুপিয়ে জখম করে। তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন অস্ত্রধারী তিন সন্ত্রাসীকে আটক করে গণপিটুনি দেয়।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.হাবীবুর রহমান জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে ঘটনাস্থলের পাশেই থাকা ডোবায় সেচ মেশিন বসিয়ে পানি সেচে তল্লাশি চালানো হয়। তবে সেখানে কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। গ্রেপ্তার আসামিরা গণপিটুনির শিকার হওয়ায় পুলিশ পাহারায় তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মরদেহের দাফন শেষে এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা মামলা দায়ের করবেন। পুলিশ তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে।
** নোয়াখালীতে যুবককে গুলি করে হত্যা
আরএ