ঢাকা, বুধবার, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

আরিফ-ডিসি, দেখা হলো, কথা হলো না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:৩৬, জুলাই ৯, ২০২৫
আরিফ-ডিসি, দেখা হলো, কথা হলো না

সিলেট: অজানা ক্ষোভ থেকে জেলা প্রশাসকের ওপর চড়াও হলেন আরিফুল হক চৌধুরী। ক’দিন আগে শ্রমিকদের মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশে হাজির হয়ে বক্তব্য রাখেন, তুলোধুনো করেন জেলা প্রশাসককে।

এরআগে বুধবার (২ জুলাই) কোর্ট পয়েন্টের সমাবেশে জেলা প্রশাসকের উদ্দেশ্যে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, জেলা প্রশাসক, আপনি যদি মনে করেন, আমাদের মধ্যে বিভাজন করার পাঁয়তারা যে করছেন, দুএকজন নেতাকে বশ করে আপনি মনে করবেন না, পার পেয়ে যাবেন। আমাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যারা যাবে, তারা জেলা প্রশাসকের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হবে।

তিনি ডিসিকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেছিলেন, আপনি বলেন, আমাদের লোক। কিসের আমাদের লোক। আপনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আপনি চোখ রাঙিয়ে জনগণের সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। আপনাকে সাবধান করে বলে দিতে চাই, সিলেটের মানুষকে অপমান করবেন না। এরপর সিলেট জেলা পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ৫ দফা দাবিতে ধর্মঘট আহ্বান করে।

তিনি আরও বলেছেন, জেলা প্রশাসক নাকি বলে, আরিফুল হক এখন আর জনপ্রতিনিধি নয়। এমনটি উল্লেখ করে সাবেক এই মেয়র জনসম্মুখে বলেছেন, সিলেটের মানুষ দশ বছর আমাকে জনপ্রতিনিধি করেছেন। ‘তুমি’ জেলা প্রশাসক, কোথাকার কি, তোমার মতো কয়েকজন জেলা প্রশাসক তো আমার আন্ডারে কাজ করেছেন। কথাবার্তা সাবধান করে বলবা। জনপ্রতিনিধি কে আছেন কে নাই, এটা তোমার নির্ধারণ করার কথা না।

এই ইস্যুতে জেলা প্রশাসকের পদত্যাগ, পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়াসহ পরিবহণ শ্রমিকদের দাবি ৫ থেকে ছয় দফায় উন্নীত করে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্ট কাল ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভোর থেকে চলা ধর্মঘট দুপুরে এসে স্থগিত হয় বিভাগীয় কমিশনারের আশ্বাসে।  

পরে বিকাল ৩টায় বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে বসেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। ওই বৈঠকে মুখোমুখি টেবিলে বসেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। কিন্তু দেখা হলেও একে অন্যের চোখ এড়িয়ে চলেন। তাদের মধ্যে কথাও হয়নি।  

সভা শেষে এক শ্রমিক নেতা বলেন, বিভাগীয় কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজা উন নবী বলেন, আগে মানুষ। মানুষ না বাঁচলে পরিবেশ দিয়ে কী হবে। মানুষ বাঁচলে পরিবেশ ঠিক রবে। বৈঠকে পাথর কোয়ারি খুলে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আর ধর্মঘট দেবেন না, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন।  

সম্প্রতি পাথর কোয়ারিকান্ডে শ্রমিকদের দাবি দয়ার সাথে এক মত পোষণ করে আরিফুল হক চৌধুরীকে বিভিন্ন সমাবেশে জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবি করে সমালোচনা করতে দেখা যায়। ৮ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটায় সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের সাথে শ্রমিকনেতাদের সাথে সভায় তাকেও দেখা যায়।

৬ দফা দাবিতে আন্দোলনরত পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী। এতে রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলামসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

এনইউ/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।