পাবনার সুজানগরে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘাতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফসহ ১০ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস নোটের মাধ্যমে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন— সুজানগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রউফ শেখ (৫২), ছাত্রদল নেতা শেখ কাউছার (২৮), যুবদল নেতা মনজেদ শেখ (৪৫), সুজানগর পৌর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর খা (৬০), উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য কামাল শেখ (৪৬), পৌর যুবদল সদস্য মানিক খাঁ (৩৮), সুজানগর এনএ কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি শাকিল খাঁ (২৫), পৌর ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রুহুল খাঁ (৪০), বিএনপি কর্মী লেবু খাঁ (৬০) ও যুবদল কর্মী হালিম শেখ (৪০)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুজানগরে সংঘটিত রক্তাক্ত সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উল্লিখিত নেতাকর্মীদের বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এই সংঘর্ষে জড়িত মোলায়েম খাঁ ও সুরুজসহ অন্যান্যরা বিএনপি বা এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেউ নন। তাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কেউ সম্পর্ক রাখলে, দল তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।
বহিষ্কার সংক্রান্ত বিষয়ে সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান বলেন, বহিষ্কারের বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফকে বহিষ্কার করা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। কেউ কোনো অভিযোগও দেননি। গ্রেপ্তারও হননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) মোবাইলফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁয়ের অনুসারী আশিকের ফোন কেড়ে নিয়ে তা ভেঙে ফেলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রউফ শেখের ভাতিজা ও ছাত্রদল নেতা কাউছার এবং তার অনুসারীরা। পরে মীমাংসা হলেও বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে আশিককে সিনেমা হলের সামনে ডেকে পাঠান কাউছাররা। ওই সময় আশিক তার চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা সবুজকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গেলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। সবুজ বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে আশিক ও সবুজ তাদের অভিভাবক ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ঘটনাটি জানান।
এরপর মজিবর খাঁ, লেবু খাঁ, মানিক, সুরুজসহ একটি দল গিয়ে কাউছারদের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সদস্য সচিব আব্দুর রউফ ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করে আহত করা হয়। এ সময় রক্তাক্ত সংঘাতের ঘটনাও ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুর রউফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এসআরএস