কুমিল্লার চান্দিনায় ভাঙারি ব্যবসায়ী শব্দর আলীর (৪৫) মৃত্যুকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে—তিনি শ্বাসরোধে খুন হয়েছেন।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করছেন নিহতের পরিবার।
শনিবার (১২ জুলাই) বিষয়টি জানান চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম।
গ্রেপ্তাররা হলেন- চান্দিনা উপজেলার বরকইট গ্রামের বাসিন্দা মো. ইউনুছ মিয়া (৫২), মো. আবুল হাশেম (৪২) ও মো. কুদ্দুস মিয়া (৫৫)।
চান্দিনার বরকইট গ্রামের মৃত শব্দর আলীর স্ত্রী রিনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, পার্শ্ববর্তী বাড়ির ইউনুছ মিয়া ও তার ভাইয়েরা এক বছর মেয়াদে জমি বন্ধক রেখে আমার স্বামীর কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময় শেষে তারা জমি থেকে সরিয়ে দিলেও টাকা ফেরত দেননি। এ নিয়ে একাধিকবার বাকবিতণ্ডা হয়।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল ভোরে আমার স্বামী শব্দর আলী ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যান। কিন্তু নামাজ শেষে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে প্রতিবেশী ইউনুছ মিয়া খবর পাঠান যে আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই আমার স্বামীর অর্ধেকের বেশি শরীর মাটিতে পড়ে আছে আর মাথার অংশ গাছের সঙ্গে বাঁধা। তখন মানসিকভাবে আমরা ভেঙে পড়েছিলাম, তাই থানায় আত্মহত্যার অভিযোগ করি। তবে আমাদের সন্দেহ ছিল, তাকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিন মাস পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, আমার স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এরপর আমি ইউনুছ মিয়া, তার স্ত্রী ও তিন ভাইকে আসামি করে মামলা দায়ের করি। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।
এ ঘটনায় চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান, ১৫ এপ্রিল বরকইট গ্রামের একটি পুকুরপাড়ে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় শব্দর আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা নেওয়া হয়। পরে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, শব্দর আলী আত্মহত্যা করেননি বরং তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তদন্তের ভিত্তিতে শুক্রবার (১১ জুলাই) আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এসআরএস