গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় ঢাকা-বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপের ১৮ কিলোমিটারের উদ্বোধনী করা হয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে লাল ফিতা কেটে এই এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের আগে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, সড়কের ওপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে হবে। অন্যান্য যেসব যাতায়াতের মাধ্যম রেল, নদী পথ এবং বিমান এসবের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির বলেন, আশেপাশের দেশের তুলনায় আমাদের রাস্তা নির্মাণের ব্যয় অনেক বেশি, এগুলো কমাতে হবে।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির বলেন, ঢাকা শহরে এ ধরনের বাইপাস আমাদের করতে হবে। যাতে বড় শহরকে যানজট থেকে মুক্ত করতে পারি। সড়ক নির্মাণের ব্যয় কমাতে হবে এবং টেকনোলজি সেটা কমাতে হবে, পরিবর্তন করতে হবে। যাতে বছর বছর রাস্তা খারাপ না হয়ে যায়। আমাদের এখানে চীনের ঠিকাদার কাজ করছে। আমাদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও রেলওয়ে তাদের বলি, আর কতকাল বাইরে থেকে লোক এসে আমাদের সড়ক বানিয়ে দিয়ে যাবে। আর কতকাল বাইরে থেকে লোক এসে আমাদের রেল পথ বানিয়ে দিয়ে যাবে? এত হাজার হাজার কিলোমিটার রেল পথ হলো এখন এটার ফিজিক্যাল স্টাডি করতে পারবা না। তাহলে আমাদের এত ইঞ্জিনিয়ার থেকে লাভ কি? এত প্রকৌশলী থেকে লাভ কি?
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের অন্যান্য যে যাতায়াতের মাধ্যম আছে নদীপথে যাতায়াত করা, রেলওয়ে যাতায়াত করা ও বিমানে যাতায়াত করা এগুলোকে আমরা অবহেলা করেছি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে আমরা এখন উদ্যোগ নিয়েছি। মাল্টিলেভেল প্ল্যান করছি। এই প্ল্যানের মধ্যে আমরা সবকিছু একত্রে দেখবো। সড়ক পথ, রেল পথ ও নদী পথকে দেখবো। সবগুলো আমরা একত্রে করবো। যেখানে যেটা উপযুক্ত সেখানে সেটার ওপর জোর দেবো। যেখানে নদীপথে মুভমেন্ট সহজ হবে সেখানে নদীপথের ওপর জোর দেওয়া হবে। যেখানে রেলের জন্য সহজতর হবে সেখানে রেলের জন্য জোর দেওয়া হবে। শুধু সড়কের ওপর নির্ভরতা এটা আমাদের কমাতে হবে। প্রত্যেক দিনই জমি অধিগ্রহণ এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। এজন্য এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, সড়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবরা প্রত্যেক দিনই আসে একশ কোটি টাকা, দুইশ কোটি টাকা, ৫০ কোটি টাকার জমি অধিগ্রহণ বাবদ। আমি বলি যে, আপনারা যেভাবে জমি অধিগ্রহণ করে যাচ্ছেন তাদের তো কবরের জায়গা পাওয়া মুশকিল হবে। অন্য আরও অনেক কিছু প্রয়োজন আছে, বাসাবাড়ির প্রয়োজন আছে, শিল্পের প্রয়োজন আছে। পত্র-পত্রিকায় সয়লাব হয়ে গেছে সব রাস্তা ভেঙে গেছে। চলাচল করা যাচ্ছে না। সিলেট থেকে আমি প্রত্যেক দিন ফোন পাই। উপদেষ্টারাও ফোন দেয় ওখান থেকে যাতায়াতের পথে ভয়াবহ সমস্যা হয়। শুধু রাস্তার ব্যয় কমালে হবে না, রাস্তার যে, টেকনোলজি সেটাও চিন্তা করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে নিজেরা একটা রাস্তা করে দেখান। নিজেরা একটা পাওয়ার প্ল্যান করে দেখান। নিজের একটা ট্রান্সমিশন লাইন করে দেখান। বিদেশিদের নির্ভরতা থেকে আমাদের মুক্ত হয়ে আসতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল করিম খান ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন। এ ছাড়াও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
আরএস/এএটি