রাজবাড়ী: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের ‘জুলাই শহীদ’ ও আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে শহীদ পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা ও মাসে ২০ হাজার ভাতা দেওয়ার পাশাপাশি তিন ক্যাটাগরিতে আহতদেরও ভাতা, চিকিৎসা, চাকরিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
তবে রাজবাড়ীর জুলাই যোদ্ধাদের দাবি সরকারের আশ্বাস পুরোপুরি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এ জেলার জুলাই যোদ্ধারা এক লাখ টাকা করে সরকারি সহযোগিতা পেলেও তাদের চাকরির বিষয়ে এখনো উদাসীন সরকার।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জেলার শহীদ হয়েছেন তিনজন এবং আহত ৮০ জন। এরই মধ্যে শহীদ তিনটি পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছ। এ ছাড়া জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তিন শহীদ পরিবারকে দুই লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। তাদের ভাতা প্রদানের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আহত ৮০ জনকে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জুলাই যোদ্ধাদের ৪৪ জনকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়া হয়েছে।
জুলাই যোদ্ধা সংসদ রাজবাড়ী জেলা শাখার আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন বলেন, রাজবাড়ী জেলার জুলাই যোদ্ধাদের অনেককেই স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো অনেকেই কার্ড পাননি। জুলাই যোদ্ধারা সবাই এক লাখ টাকা করে পেয়েছেন। তিনটি শহীদ পরিবারো আর্থিক অনুদান পেয়েছে। তবে আহতদের মাসিক ভাতার বিষয়টি এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভাতার জন্য জুলাই যোদ্ধাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা যারা আহত হয়েছি। সরকার আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনা খরচে সুচিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছে, স্বাস্থ্যকার্ড দিয়েছে। তবে সরকারি হাসপাতালে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা ভালো ব্যবহার পাই না। এজন্য আমি সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসা নিচ্ছি। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিলেও, এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। সরকার কোনো মাথাই ঘামাচ্ছে না আমাদের চাকরির বিষয় নিয়ে। আমরা চাই আমাদের সব বিষয়ে সরকার ভালোভাবে গুরুত্ব দিক।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ হারুন ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সাবির্ক খোঁজখবর রাখার পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতাও করেছেন।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মিজ সুলতানা আক্তার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের পাশে আমরা সবসময় আছি। এরই মধ্যে শহীদ তিনটি পরিবারকে সঞ্চয়পত্র দেয়াসহ আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। আহতদেরও আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের যেকোনো সমস্যার সম্ভাবনায় আমরা সবসময় পাশে থাকবো।
এএটি