মৌলভীবাজার: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের একটি নতুন সংবিধান প্রয়োজন, যেখানে বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকারের কথা লেখা থাকবে। ১৯৪৬ সালের আজাদীর লড়াই, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্বীকৃতি থাকবে।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজার শহরে জাতীয় নাগরিক পার্টির জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠী রাজপথে নেমেছে। কিন্তু বাহাত্তরের সংবিধান ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করে মুজিববাদী সংবিধান চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত। আমরা সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে গত ৫৪ বছর ধরে আছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা সেই চক্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।
দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে সারাদেশে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত পদযাত্রায় গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী যোদ্ধারা অংশ নেন।
জনসভায় আরও বক্তব্য দেন- এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাস প্রমুখ নেতা।
নাহিদ বলেন, আমরা এসেছি মৌলভীবাজারে দেশ গড়ার ডাক দিয়ে। জুলাই-আগস্টে আমরা বলেছিলাম, একটি নতুন বাংলাদেশ লাগবে, একটি নতুন বন্দোবস্ত লাগবে। পুরোনো সিস্টেমে ও পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চালানো যাবে না। কিন্তু অভ্যুত্থানের পরে নানা শক্তি আবারও চেষ্টা করছে পুরোনো সিস্টেমে দেশকে ফিরিয়ে নিতে। আমরা বলেছি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যখন রাজপথে নেমেছিলাম, আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন, আমাদের বোনেরা নির্যাতিত হয়েছেন। আমরা বাংলাদেশকে আর পুরোনো রূপে ফিরিয়ে দিতে দেব না। বিচার সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদের স্বপ্ন ছিল আকাশচুম্বী। তরুণরা কর্মসংস্থানের দাবিতে রাজপথে নেমেছিল। বাংলাদেশের জনগণ অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে রাজপথে নেমেছিল।
আক্ষেপ প্রকাশ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমাদের সব স্বপ্নকে এখন নির্বাচনের একমাত্র দাবিতে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। আমরা বলেছিলাম, নির্বাচন চাই, কারণ আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে এবং ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করা শক্তি। কিন্তু বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অর্থহীন হয়ে যাবে, জনগণ তা গ্রহণ করবে না। তাই বিচার ও সংস্কারের যে অগ্রগতি হয়েছে, তার পক্ষে ঐকমত্য তৈরি করে তারপরই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।
বিবিবি/আরবি