বরগুনা: বরগুনার তালতলী উপজেলার বিশিষ্ট সমাজসেবক, ব্যবসায়ী ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) তৎকালীন উপজেলা টিম লিডার ‘সিডরম্যান’ খ্যাত জয়দেব দত্তের মৃত্যুর প্রায় আট বছর ৭ মাস পর তাকে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বরগুনার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জয়দেব দত্তের ছেলে প্রসেনজিং দত্ত বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এ হত্যা মামলা করেন।
আদালতের বিচারক ইফতি হাসান মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন), পটুয়াখালীকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলায় আসামি করা হয়েছে জয়দেব দত্তের শ্যালক বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস, তালতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবী উল কবির জোমাদ্দার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহা. তৌফিকুজ্জামান তনু, বড়বগী ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম মুন্সী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজীসহ মোট ১৪ জনকে।
প্রসেনজিং দত্ত মামলার বর্ণনায় উল্লেখ করেন, তার বাবা একজন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ছিলেন। একজন মানবিক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বন্ধকীয় ব্যবসা করতেন। তালতলী উপজেলা শহরে তার কোটি টাকা মূল্যের একটি বসতবাড়ি রয়েছে। আসামিরা তার সম্পত্তি এবং ব্যবসার প্রতি লোভ থেকে ২০১৭ সালের ২ আগস্ট রাতে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। পরে তৎকালীন জাতীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের সহযোগিতায় হত্যার এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেন।
প্রসেনজিং দত্ত বলেন, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে আমার বাবা জয়দেব দত্তকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে তখন ধামাচাপা দিয়েছিল। আমি এ হত্যার বিচার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করি, তদন্তে সঠিক তথ্য বেড়িয়ে আসবে।
আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইফতি হাসান বাদীর বক্তব্য শুনে অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআই পটুয়াখালীকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম হাওলাদার।
এ মামলায় অন্যতম আসামি ও জয়দেব দত্তের শ্যালক সঞ্জীব দাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। বাদী প্রসেনজিং আমার ভাগিনা, তার নামে মাদক সংশ্লিষ্ট একাধিক মামলা বিচারাধীন। কয়েক দিন আগে সে টাকার জন্য তার মাকে মারধর করেছে, যা আমাকে ফোনে জানিয়েছে তার মা নিজেই।
তিনি আরও বলেন, ওর বাবা আত্মহত্যা করেছেন। তার দায়ও ওর দিকেই যায়। এ মামলায় যাদের নাম দেওয়া হয়েছে, তাদের অনেককে আমি চিনিও না। তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটনের দাবি জানাচ্ছি।
এসআই