নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী মুর্তজা ইনস্টিটিউট আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নাটক, প্রদর্শনী, সেমিনার, সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে এটি দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
১৮৭০ সালে সৈয়দপুরে রেলওয়ে কারখানা স্থাপনের পর ইংরেজদের বিনোদনের জন্য নির্মিত হয় সুরম্য মিলনায়তন ‘দ্য ইউরোপিয়ান ক্লাব’। পরবর্তীতে এর নামকরণ হয় মুর্তজা ইনস্টিটিউট। লাল ইটের গাঁথুনিতে নির্মিত এ ভবন আজও কালের সাক্ষ্য বহন করছে।
তথ্যমতে, সংস্কারের অভাবে মুর্তজা ইনস্টিটিউট দিন দিন জীর্ণ হয়ে পড়ছে। পাঠাগারের মূল্যবান বই নষ্ট হচ্ছে, আর সংগ্রহে থাকা অনেক বাদ্যযন্ত্র ও চিত্রকলা ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। অথচ এর গ্রন্থাগার একসময়ে ছিল দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের ভাণ্ডার। বর্তমানে এখানে প্রায় পাঁচ হাজার বই সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১,২৩৯টি উপন্যাস, ৯৫৩টি ছোটগল্প, ৫৮৬টি ধর্মীয় গ্রন্থ, ২৯০টি ভ্রমণ কাহিনী, ৮৬৯টি নাটক, ১৬২টি কবিতার বইসহ ইংরেজি ও উর্দু ভাষার বিপুলসংখ্যক বই।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৩০ সালের পর আসাম–বেঙ্গল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার বিআর সিংয়ের নামে রেলওয়ে ময়দানের পশ্চিম পাশে একটি ভবনের নামকরণ করা হয় বিআর সিং ইনস্টিটিউট, যা বর্তমানে সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। পরবর্তীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব পরিবর্তিত হয়ে বিআরসি ক্লাব, পরে কালপেপার ইনস্টিটিউট এবং সর্বশেষ মুর্তজা ইনস্টিটিউট নামে পরিচিতি পায়।
বর্তমানে এ ইনস্টিটিউট কেবল নিজস্ব প্রয়োজনে নয়, বরং শহরের বিভিন্ন নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনুষ্ঠান মঞ্চায়নের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সৈয়দপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক অপু বিশ্বাস বলেন, ‘সৈয়দপুরে আর কোনো মিলনায়তন নেই। ব্রিটিশ আমলের এ ঐতিহ্যবাহী মিলনায়তনটি সংরক্ষণ ও আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি। ’
আরআইএস