পাবনা (ঈশ্বরদী): রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম বলেছেন, আমরা চেষ্টা করছি, তবে খুব তাড়াতাড়ি না। তবে যত দ্রুত সম্ভব, পাবনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি ট্রেন আগে দেব।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে লোকোমোটিভ ডিজেল কারখানা এবং ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রেলপথ সচিব বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি লোকসানি খাত। দুই টাকা নয় পয়সা খরচ করে এক টাকা আয় করে রেল। তবে রেলওয়ে সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান সরকারের, তাই মানুষকে সেবা দিচ্ছি। সব দেশেরই যাত্রীবাহী ট্রেন লাভজনক হয় না, এটা লোকসানেই চলে। রেলওয়ের রাজস্ব আসে মূলত কনটেইনার ও মালবাহী ট্রেন থেকে। বর্তমানে শ্রমিক সংকট, কোচ স্বল্পতা ও লোকোমোটিভ স্বল্পতা আছে। তবে আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ২০০ কোচ আনব। ডিজাইন ফাইনাল হয়েছে, তারপর তারা বানিয়ে দেবে। এ বছরের শেষে ২০টি কোচ এবং আগামী বছরের মার্চে আরও ২০টি কোচ আসবে। এভাবে প্রতি মাসে কোচ আসবে। একটি ট্রেন চালাতে লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন), পাওয়ারকারসহ কমপক্ষে সাতটি কোচ লাগে। তাই বগিগুলো এলেই পাবনা-ঢাকা রুটে একটি ট্রেন চালানো শুরু করব।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে রেলপথ সচিব বলেন, ঈশ্বরদীর মাঝগ্রাম থেকে পাবনার ঢালারচর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণকালে পরিকল্পনা ছিল রাজবাড়ীকে কানেক্ট করে ওয়াই সেতু দিয়ে ঢাকায় নেওয়া। কিন্তু ওয়াই সেতুর নির্মাণ খরচ কার্যকর হবে না। এখন পরিকল্পনা হলো ঢালারচর থেকে পাচুরিয়া-রাজবাড়ী হয়ে পদ্মা ব্রিজে কানেক্ট করা। এতে একটি ব্রিজ লাগবে। আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে মানিকগঞ্জের কাছে রাজবাড়ীকে স্পর্শ করে একটি বড় ব্রিজ নির্মাণ করে ঢালারচরের সঙ্গে মানিকগঞ্জ হয়ে ঢাকা সংযোগ দেওয়া হবে। আমিন বাজার থেকে মেট্রো হবে, তাই মেট্রো কানেকশনও ধরিয়ে দেওয়া হবে। ঢাকার চারপাশের জেলা শহরগুলোর মধ্যে শুধুই মানিকগঞ্জের সঙ্গে রেলের যোগাযোগ নেই। এখানে রেল সংযোগ খুব জরুরি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফরিদ আহমেদ, অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক সুজিত কুমার বিশ্বাস, প্রধান প্রকৌশলী আহম্মদ হোসেন মাসুম, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) লিয়াকত শরীফ খান, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডেন্ট মোহাম্মদ রেজওয়ান উর রহমান, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা গৌতম কুমার কুণ্ডু, সেতু প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী এমএম রাজিব বিল্লাহ, বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী রিফাত শাকিল, বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ আব্দুল হানিফ, বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ নাজিব কায়সার, যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) ময়েন উদ্দিন সরদার, যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ) রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে রেলপথ সচিব ফাহিমুল ইসলাম পাবনা শহর থেকে সড়কপথে ঈশ্বরদীর লোকোমোটিভ ডিজেল কারখানায় পৌঁছালে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। পরে তিনি ঈশ্বরদী লোকোসেড, রেলওয়ে ক্যারেজ ডিপো ও ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন পরিদর্শন শেষে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সদর দপ্তরে যান। সেখানে অফিসার্স ভিআইপি রেস্টহাউজে মধ্যাহ্নভোজ শেষে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
এসআরএস