মাত্র ২ বছর ৯ মাস বয়সী শিশু রাব্বি। জন্মের পর ১৬ মাস বয়স থেকেই তার মাঝে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
আর রাব্বির খোঁজখবর নিয়ে আজ শুক্রবার (২ মে) সকালে প্রাথমিকভাবে কিছু অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছেন নান্দাইল বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা।
রাব্বির মা জানান, প্রতিদিনই রাব্বিকে প্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়াতে হয়। এতে খরচ হয় দিনে ৩০০ টাকারও ওপরে। এই টাকায় নিয়মিত ওষুধ খাওয়াতে হিমশিম অবস্থা তার। তাছাড়া চিকিৎসক বলেছেন দ্রুত অপারেশন না করালে মৃত্যু নিশ্চিত। এ অবস্থায় গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় ঝাড়ু দিয়ে দিনে কিছু টাকা পান তিনি। তা দিয়ে কোনোমতে রাব্বির চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে সন্তান ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ অসহায় মা কিছুই করতে পারছেন না।
সন্তানের প্রসঙ্গ উঠলেই নাসরিন মুখে আঁচল চাপা দিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠেন। কেন এমন হলো, কীভাবে সন্তানের জীবন বাঁচানো সম্ভব এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পান না তিনি। তবুও শেষ চেষ্টাটুকু করতে চান এই অসহায় মা।
রাব্বি জানে না, তার হৃদপিণ্ডে একটি ফুটো রয়েছে। সে হাসে, খেলে, দুরন্তপনায় মাতিয়ে রাখে আশপাশ। কিন্তু এই আনন্দের আড়ালে লুকিয়ে আছে মারাত্মক বিপদ।
নাসরিন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রাম এলাকার মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। প্রায় চার বছর আগে ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার ফুকরা গ্রামের মো. রুহুল আমিনের ছেলে মো. নাজমুল হাসানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী নাজমুল যৌতুক হিসেবে ২ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন।
টাকা না দেওয়ায় নাসরিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। এমনকি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাকে বাবার বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়। সন্তান জন্মের পর নাসরিন কয়েকবার স্বামীর বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করলেও প্রতিবারই তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাব্বির বয়স যখন ১৬ মাস, তখন তার মা নাসরিন জানতে পারেন, সন্তানের হার্টে ছিদ্র। ঢাকার হার্ট ফাউন্ডেশনে রাব্বির চিকিৎসা করানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসা এবং দ্রুত অপারেশন ছাড়া রাব্বির সুচিকিৎসা হওয়া সম্ভব নয়। তবে অপারেশনের জন্য প্রয়োজন তিন লাখ টাকা।
ধারদেনা করে ও নিজের জমানো সব টাকা শেষ করে নাসরিন এখন নিঃস্ব। তার পক্ষে আর সন্তানের চিকিৎসা করানো আর সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসার অভাবে রাব্বির হৃদপিণ্ডের ফুটো দিন দিন বড় হচ্ছে।
নাসরিন জানান, চিকিৎসার জন্য প্রাথমিকভাবে ১৮ হাজার টাকা দরকার। অপারেশনের সময় লাগবে আরও তিন লাখ টাকা। তিনি সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষের কাছে তার সন্তানের জীবন বাঁচানোর জন্য সাহায্যের আবেদন করেছেন। যারা সাহায্য করতে চান, তারা ০১৮৭৪৮৮৯২৭২ নম্বরে যোগাযোগ করুন। সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সাহায্যের হাত বাড়ান।
এসএএইচ