ঢাকা, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯ সফর ১৪৪৭

বসুন্ধরা শুভসংঘ

নারীর ক্ষমতায়নে বসুন্ধরা শুভসংঘের সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪৫, আগস্ট ৩, ২০২৫
নারীর ক্ষমতায়নে বসুন্ধরা শুভসংঘের সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক নারীর ক্ষমতায়নে বসুন্ধরা শুভসংঘের সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক হয়েছে

গাইবান্ধা: নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।  

শনিবার (০২ আগস্ট) দুপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘ গাইবান্ধা জেলা শাখার আয়োজনে উপজেলার কুঠিবাড়ি ঈদগাহ সংলগ্ন ঝিলপাড়া মাঠে এ বৈঠক হয়।

এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।  

পান্থাপাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, গোবিন্দগঞ্জ বিএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উঠান বৈঠকে এসে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অন্তরায় ও সমাধানের বিষয়ে কথা বলেন।  

বসুন্ধরা শুভসংঘের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঁচজনকে বিশেষ উপহার হিসেবে বই দেওয়া হয়।  

এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা জেলা বসুন্ধরা  শুভসংঘ সভাপতি হুমায়ূন আহমেদ বিপ্লব। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ফরহাদ হোসাইন ফাহাদ। বৈঠকের শুরুতে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।

সূচনা বক্তব্যে শিক্ষক ফরহাদ হোসাইন ফাহাদ বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এ দেশের নারী জাগরণে সাড়া পড়েছিল সাধারণত শিক্ষা গ্রহণকে কেন্দ্র করে। এছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নারী তার অধিকার আদায়ে সচেতন হয়ে ওঠে। বায়ান্ন-এর ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সোচ্চার অংশগ্রহণ ছিল এ আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি।

শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান অর্পি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের কথা দীর্ঘকাল ধরে ব্যাপক আলোচিত হলেও তা প্রকৃত অর্থে পুরুষ শাসিত সমাজের একটি শ্রেণির বিরোধিতার ঘেরাটোপে আটকা পড়ে আছে। কারণ এখনও পত্রিকা কিংবা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুনের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক রুটিন ধরে প্রকাশিত হয়। নারীর মর্যাদা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কার্যকর কোনো নীতিমালা বাস্তবায়িত না হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সুরমা আকতার বলেন, অতীতে মুখে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেও তাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, পেশাগত দিকগুলো বার বার আড়াল করা হয়েছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন নারীকে হেয় ও অপমানিত করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এর ফলে অনেকেই মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে যান। ক্ষেত্র বিশেষে আত্মহননের মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটেছে।  

তিনি আরও বলেন, ৩৬ জুলাই ছাত্র আন্দোলন এবং বিজয়গাথা আমাদের কাছে আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছে। আমরা চাই পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিয়ে তরুণ নেতৃত্ব তাদের কণ্ঠকে জোরদার করুক।

জেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি হুমায়ন আহমেদ বিপ্লব বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ নারীর পায়ের নিচে শক্ত মাটি উপহার দিতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সারাদেশে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, শিক্ষা বৃত্তিসহ নারীর উন্নয়নে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।  

তিনি বলেন, নারীর উন্নয়নে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের একার পক্ষে এ কাজটি করা সম্ভব না। রাষ্ট্র ও সচেতন মানুষদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। বসুন্ধরা শুভসংঘ আগামীতে নারীদের নিয়ে আরও কাজ করবে।

উঠান বৈঠকে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি  বসুন্ধরা শুভসংঘের কর্মী মো. শাওন সরকার, মো. রিফাত রহমান, মো. সিফাত সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।