ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ‘আমার খুব খারাপ লাগে যখন দেখি সুস্থ সবল মানুষ ভিক্ষা করে। আমি অন্ধ হয়ে যদি কাজ করে খেতে পারি, তাহল অন্যরা কেন পারবে না? সবার প্রতি অনুরোধ, যারা সুস্থ হয়েও ভিক্ষা করে, আপনারা তাদের বোঝাবেন।
এভাবেই বলছিলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছিদ্দিকুর রহমান। ট্রেনে ঘুরে বিভিন্ন পণ্য ফেরি করে বিক্রি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বসুন্ধরা শুভসংঘ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে তাকে সহায়তা করা হয়েছে।
৭২ বছর বয়সী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছিদ্দিকুর রহমানের বাড়ি নরসিংদীতে।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে তার হাতে সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। সদ্য প্রয়াত বিএনপি নেতা মো. কোব্বাত হোসেনের পরিবারের সহযোগিতায় ছিদ্দিকুর রহমান ও কিশোর ফেরিওয়ালা মো. ফরহাদ মিয়ার হাতে সহায়তা হিসেবে কিছু পণ্য তুলে দেওয়া হয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হওয়া এ আয়োজনে কোব্বাত হোসেনের পরিবারের পক্ষে অংশ নেন তার ভাই তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সাজ্জাদ হোসেন।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমান, রেলওয়ে জংশন স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ বাপ্পী, সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন স্বপন, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নরুন্নবী ভূঁইয়া, সাংবাদিক কাজী মফিকুল ইসলাম, জুটন বণিক, হাবিবুর রহমান, আনিসুর রহমান, রাধানগর স্পোটিং ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ কামাল, প্রবাসী মো. লিটনসহ অনেকে।
আয়োজনের সমন্বয় করেন কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ও শুভসংঘ জেলা শাখার উপদেষ্টা বিশ্বজিৎ পাল বাবু।
বিক্রির জন্য পণ্য পেলে ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি গ্রাজুয়েশন করেছি। আমার এক মেয়ে অনার্স পাস। আরেক মেয়ে পড়াশোনা করে। ট্রেনে একেক সময় একেক ধরনের জিনিসি বিক্রি করি। ব্যবসার পুঁজি বাড়াতে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগের ফলে আমার খুব সুবিধা হলো। ’
কিশোর ফরহাদ বলে, ‘বাবা নেই। মাও থাকেন চট্টগ্রামে। আখাউড়ায় থেকে পানি ও জুস বিক্রি করি। আগে বাকিতে মালামাল আনতাম। এখন বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে যেসব পণ্য দিল, তাতে বাকি আনতে হবে না। আমার মায়ের কাছে এখন থেকে আরও বেশি করে টাকা পাঠাতে পারব। ’
এ সময় সাংবাদিক নুরুন্নবী ভূঁইয়া বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ যেভাবে মানবকল্যাণে কাজ করছে, সেটি প্রশংসনীয়। সাংবাদিকদের উদ্যোগেও এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। ’
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এমন আয়োজনে আমার পরিবার শরিক হতে পারায় ভালো লাগছে। সব সময় এ ধরনের উদ্যোগের পাশে থাকব। ’
এসআই