ঢাকা: পেস বোলিং সহায়ক উইকেট সেই সঙ্গে আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে পেসারদের জন্য এবারের বিশ্বকাপ স্বপ্নেরই হতে পারে। তবে চ্যালেঞ্জটি স্পিনারদের জন্যই।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ। তাই কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে এই দুই স্বাগতিকের ভালো ফলাফল আসাটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে, প্রায় একই ঘরানার কন্ডিশন ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডের জন্য। এদিকে ভারত প্রায় মাস দুয়েকের অবস্থানে পূণাঙ্গ টেস্ট-ওডিআই সিরিজ খেলে বিশ্বকাপ কন্ডিশনকে পরিচিতই করে ফেলেছে। আরেক ফেভারিট শ্রীলংকাও তাই।
অপরিচিত কন্ডিশন, অনেকদিন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে না খেলা এবং স্পিন শক্তির মূল ভরসার বাংলাদেশকে তাই চ্যালেজ্ঞটা মাথা পেতেই নিতে হচ্ছে। মূলত পেসার সহায়ক কন্ডিশনে বিশেষ করে চ্যালেজ্ঞটা স্পিনারদের জন্যই। প্রায় সবগুলো দেশের স্পিনারদের জন্যই বিশ্বকাপটা বেশ কষ্টকর ও খাটুনির হবে বলে মত ক্রিকেট বিশ্লেষকদের।
বিশ্বকাপে এবারের আসরে স্পিনাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন না বলে ইতোমধ্যেই সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন শ্রীলংকান স্পিন যাদুকর মুত্তিয়া মুরালিধারান। কেউ যদি এই ধারণা পোষন করে থাকেন যে স্পিনাররা বেশ ভালোই করবেন, তবে দিনশেষে তাকে হতাশ হতে হবে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন এই স্পিন তারকা।
অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর বাংলাদেশের চারটি প্রস্তুতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে দুটি আর পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি। একে তো এ চারটি ম্যাচের কোনোটিতেই জিততে পারেনি টিম বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রথম তিনটি ম্যাচে স্পিনাররা চমকও দেখাতে ব্যর্থ। দুই বিশেষজ্ঞ স্পিনার তাইজুল কিংবা আরাফাত সানি ওই তিন ম্যাচে বেস্ট বোলিং ফিগারে দুই উইকেটও শিকার করতে পারেননি। তবে বৃহস্পতিবার আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে শেষ ম্যাচে তাইজুল ৮ ওভার বল করে ২৯ রান খরচায় ২টি উইকেট নিয়েছেন। আর সাকিব, নাসির নিয়েছেন একটি করে উইকেট। তবে এতে এখনও বলা যাচ্ছে না কতটা চাপ মুক্ত স্পিনাররা। কারণ বাংলাদেশের মূল ভরসা যে ওই স্পিনই।
অন্যদিকে পেসাররা করেছেন ভালো। সাকিব, তাইজুল, আরাফাত সানি, মাহমুদুল্লাহ, সাব্বিররা প্রস্তুতি পর্বে তেমন জ্বলে উঠতে না পারলেও মাশরাফি, রুবেল, আল-আমীন, তাসকিনরা কন্ডিশন কাজে লাগাচ্ছেন পুরো দমে। টাইগারদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে স্পিনারদের পারফরম্যান্স আশানুরূপ নয় ইতোমধ্যে এ মন্তব্য করে রেখেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
অবশ্য স্পিন কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধারানের কথা ফলেছে শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়। প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে তেমনভাবে স্পিন কাজ করেনি অন্য দলগুলোরও। পাকিস্তানের শহিদ অফ্রিদিও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বুধবারের প্রস্তুতি ম্যাচে ১০ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ৫৯ রান। পাননি কোনো উইকেটই। ফলে চ্যালেজ্ঞটা স্পিনারদের এটি শুধু বাংলাদেশের জন্যই প্রযোজ্য নয়।
বিশ্বকাপের কন্ডিশন পেসাদের সহায় হলেও, সাকিব রিয়াদের মতো স্পিনারদের পাশাপাশি বাংলাদেশ দলে দুইজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার রেখেই চূড়ান্ত দল নির্বাচন করে ক্রিকেট বোর্ড। এতে বিসিবি’র যুক্তি ছিল। বিশ্বকাপে পেসারদের সঙ্গে টাইগারেদের বোলিংয়ের মূল চালিকা শক্তি স্পিনে প্রধান্য দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার পালা বাংলাদেশের মূল ভরসার স্পিন; পেসকে সঙ্গে নিয়ে আসরের মূল ম্যাচগুলোতে কতটুকু প্রাধান্য বিস্তারে সক্ষম হয়। আর তাতেই নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভালো ফলাফলের মূল চাবিকাঠি।
এরপরের প্রতিবেদন পড়ুন-
ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিক রানের নিশ্চয়তাই আসল
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫