ঢাকা: দেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রাণকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। স্বাধীনতা লাভের আগে ‘ঢাকা স্টেডিয়াম’ নামেই পরিচিত ছিল এটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো ট্র্যাকজুড়ে কমপক্ষে ২০টির বেশি ক্ষতচিহ্ন। আর অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের হিসাব মতে, ২৭টি স্থানে ক্ষতি হয়েছে। এই ট্র্যাকে কোথাও জন্মে আছে ঘাস আর কোনো কোনো স্থানে বড় ধরনের গর্ত! কোনো কোনো জায়গায় ট্র্যাকের স্তরও ওঠে গেছে। কোথাও ফুলে গেছে। রং উঠে যাওয়ায় মার্কিংগুলোও এখন চোখে পড়ছে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানে ভারি যন্ত্রপাতি স্থাপন, মঞ্চ নির্মাণ ও দর্শকদের বসার স্থান করতে গিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে পুরো অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকটিকে। আর এ কারণে সত্যিই এখন ট্র্যাকটি অ্যাথলেটদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
তারা স্পষ্ট করে বলছেন, প্রায় দশ কোটি টাকা ব্যয়ে যে ট্র্যাক স্থাপন করা হয়েছে তা অযত্ন আর অবহেলার কারণে এখন প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ট্র্যাকটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ধারাবাহিকতার চিত্র হিসেবে দেখা যাচ্ছে, পেশাদার লিগসহ ফুটবলের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট, ছোটখাটো অনুষ্ঠান আয়োজন, ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধন উপলক্ষে স্টেডিয়ামটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ‘সেলিব্রেশন কনসার্ট’ ইত্যাদি। তবে, ট্র্যাকটির ‘বারোটা’ বেজে যায় ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবে।
অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকের এ দুর্দশা নিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রশাসক মো. ইয়াহিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘ট্র্যাকের অবস্থা বেশ খারাপ। খুব দ্রুত এর সংস্কার করা প্রয়োজন। আমার জানা মতে, এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ’

আর অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত ট্র্যাক মেরামতের জন্য আমরা ক্রীড়া পরিষদের কাছে লিখিত সুপারিশ করেছিলাম। চলতি বছরের মার্চ মাসে ক্রীড়া পরিষদে একটি সভায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ৬০ লাখ টাকার একটি বাজেট ধরা হয়েছে। এখন বরাদ্দ পেলেই ট্র্যাক সংস্কারের কাজ শুরু হবে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘খেলার মাঠ খেলার জন্য থাকা ভালো। সেখানে বিশ্বকাপ উদ্বোধনী হয়, মঞ্চ বানানো হয়, মাঠে ছয় টনের ট্রাকগুলো প্রবেশ করে। ফলে মাঠ ও ট্র্যাকের বড় ধরনের ক্ষতি হয়। একটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে সবসময় ক্রীড়ার জন্য এতো টাকা দেওয়া সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন কোনো খেলার মাঠ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া না হয়। ’

কবে নাগাদ ‘ঘাস ও মাছ’ চাষের কবল থেকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকটি মুক্তি পাচ্ছে সেটি কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে বলতে না পারলেও ক্রীড়ানুরাগীরা দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান চাইছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৪ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৫
ইয়া/এমএমএস/এইচএ/