ঢাকা: প্রস্তাবিত নতুন অর্থবছরের (২০১৫-১৬) বাজেটে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয় বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, আগের চেয়ে খানিকটা বাড়ানো হলেও ক্রীড়াঙ্গনের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন খাতের জন্য এ বাজেট পর্যাপ্ত নয়।
গত ৪ জুন জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ৮৩৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩২৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং অনুন্নয়ন খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫০৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
এবারের প্রস্তাবিত ক্রীড়া বাজেটে গত অর্থবছরের (২০১৪-১৫) সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৬৭ কোটি ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই বাজেটও অপর্যাপ্ত।
তাদের মত, বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন এগিয়ে গেলেও এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারছে না বাংলাদেশ। কেন এগিয়ে যেতে পারছে না? তারা বলছেন, অর্থ বরাদ্দে অপর্যাপ্ততা।
ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের মতে, অর্থাভাবে তৃণমূল পর্যায়ে ক্রীড়ার উন্নয়ন যেমন হচ্ছে না, তেমনি সঠিকভাবে হচ্ছে না ক্রীড়া প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মানোন্নয়নও। এমনকি অর্থের অভাবে ফেডারেশনগুলো সঠিকভাবে লিগ টুর্নামেন্টও আয়োজন করতে পারছে না। এছাড়া, পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আন্তর্জাতিক আসরগুলোতে খেলোয়াড়েরাও অংশ নিতে পারেন না। এই অপ্রতুল বাজেট কোনো খাতের চাহিদাই পুরোপুরি পূরণ করতে পারবে না।
ফুটবল-হকিসহ চল্লিশটির বেশি ফেডারেশন রয়েছে বাংলাদেশে। বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে অসন্তোষ প্রায় সবগুলো ফেডারেশনেরই থেকে গেছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) কোষাধ্যক্ষ বাদল রায় বলেন, ‘ বাজেট এখনও প্রস্তাবিত। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে প্রান্তিক পর্যায়ে কোনো সুফল আসবে না। কারণ তৃণমূল পর্যায়ে প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। প্রতিবারের মতো এবারও এনএসসির বাজেটে প্রশিক্ষণ খাতে সামান্য কিছু অর্থ বরাদ্দ থাকছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘এ বাজেটে বড় অংশই চলে যাবে ফেডারেশনগুলোর বেতন, রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্য খাতে। তাহলে তৃণমূলের কী হবে? ক্রীড়ার শুরুটা তো ওখানেই। ক্রীড়া উন্নয়নেও এ বাজেট সহায়ক কোনো ভূমিকা রাখবে না। ’
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব শাহেদ রেজা বলেন, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে বরাদ্দ আসছে খুবই কম। যার ফলে ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা যায়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে অংশগ্রহণ ও অ্যাথলেটদের প্রশিক্ষণে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল বিওএ। কিন্তু, প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে অর্থবরাদ্দ সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি।
অবশ্য, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী বাজেট নিয়ে খানিকটা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের চাহিদা ছিল ৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রী ১৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। এই প্রথম ফুটবল নিয়ে আলাদাভাবে বাজেটে আলোচনা হয়েছে। আমি আশাবাদী ভবিষ্যতে এ বরাদ্দ আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৫
ইয়া/এমএমএস/জেডএস/এইচএ