সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আসাদ ধারাভাষ্য দিয়ে ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছেন। মধুর কণ্ঠ দিয়ে ধারাভাষ্যের মাধ্যমে স্থান করে নিয়েছেন মানুষের মনে।
সেই ছোটবেলা থেকেই খেলা পাগল আসাদ শুনতেন আতাহার আলী খান, রবি শাস্ত্রী, রমিজ রাজা, আলফাজ উদ্দীন, শামীম আশরাফ চৌধুরীসহ বিখ্যাত সব লিজেন্ডদের ধারা-বিবরণী। স্বপ্ন দেখতেন ধারাভাষ্যকার হওয়ার।
খেলার মাঠে গিয়ে মাইক হাতে ধারাবিবরণী দিতে শুরু করতেন সাহসের সাথে। অনেকেই তাকে পাগল বলে উপহাস করতো। কিন্তু তাতে এতটুকুও পিছপা হননি তিনি।
২০০৯ সালে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে অনুষ্ঠিত জোনাব আলী স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য ডাক পান আত্মপ্রত্যয়ী আসাদ। সেই থেকেই শুরু। হতে চান জাতীয় পর্যায়ের ধারাভাষ্যকার। সৌম্য, মোস্তাফিজ, সাবিনাদের মতো উজ্জ্বল করতে চান সাতক্ষীরার নাম।
এরই ধারাবাহিকতায় তিনি সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত চায়না বাংলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টের তিনটি আসর, বঙ্গবন্ধু ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কলারোয়ায় অনুষ্ঠিত বজলুর রহমান স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, গেট টুগেদার ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, এন্টি ড্রাগ নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, পুলিশ সুপার কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, আছিয়া নজির স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টসহ জেলা ও জেলার বাইরে একাধিক টুর্নামেন্টে ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য ডাক পেয়েছেন। মন জয় করেছেন উপস্থিত দর্শকের।
ধারাভাষ্যকার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর আসাদ এরই মধ্যে যোগাযোগ করেন আতাহার আলী খানের সাথে। তার পরামর্শ নিয়ে আলফাজ উদ্দীন, শামীম আশরাফ চৌধুরী, সামসুল ইসলাম, সারিয়া তানজিমদের সান্নিধ্যে বেড়ে উঠতে চান তিনি।
বাংলানিউজের সাথে একান্ত আলাপকালে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীকলস গ্রামের এমএ কাশেম ও রাশিদা বেগমের ছেলে এসএম আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘মূলত শখ থেকেই স্বপ্ন। আরও ভালো করার জন্য বড়দের পরামর্শ নিয়ে সম্প্রতি বিসিবি আয়োজিত ডিভিশনাল আম্পায়ারস কোয়ালিফাইং কোর্স সম্পন্ন করেছি। এছাড়া পিচ রিপোর্ট, ওয়েদার রিপোর্টসহ গ্রাউন্ডের অন্যান্য বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জনের জন্য নিয়মিত অনুশীলন করছি। সবকিছুই ভালো ধারাভাষ্যের জন্য জানা প্রয়োজন। টার্গেট আন্তর্জাতিকমানের ধারাভাষ্য দেওয়া। এজন্য স্পোর্টস চ্যানেলের সামনে খেলা শুরুর ৪৫ মিনিট আগে বসে থাকি। সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক একেএম আনিছুর রহমান সবসময়ই আমার কাজে উৎসাহ দেন। ’
আসাদ আরও জানান, নিয়মিত ধারাভাষ্য দেওয়ার সুযোগ কম থাকায় ২০১৩ সালে সাতক্ষীরার কমিউনিটি রেডিও নলতায় আরজে হিসেবে যোগদান করেন। তার নেতৃত্বেই ২০১৫ সালের ২৪ জুন রাজধানীর মিরপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত ওয়ানডে ম্যাচ টেলিভিশনে দেখে রেডিওতে ধারাভাষ্য দেওয়া শুরু করে রেডিও নলতা। টিভিতে খেলা দেখে ধারাভাষ্য দেওয়ার বিষয়টি অনেকটা হাস্যকর হলেও তাকে অনেক সাহস যুগিয়েছে।
জাতীয় পর্যায়ে ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য আগামীতে লক্ষ্য কি জানতে চাইলে আসাদ বলেন, ‘এখন লক্ষ্য বাংলাদেশ বেতারে ধারাভাষ্য দেওয়া। এছাড়াও আমাদের প্রশিক্ষণ দরকার। বাংলাদেশ স্পোর্টস কমেন্ট্রেটরস ফোরাম এই উদ্যোগ নিতে পারে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
এমআরপি