২০১৪ সালে ঘরের বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের অন্যতম তারকা ছিলেন অস্কার। নেইমার-থিয়াগো সিলভাদের সঙ্গে জুটি বেধে সেলেকাওদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন ‘হেক্সা’ জয়ের।
কিন্তু সব সুখের দৃশ্যপট হঠাৎ পাল্টে গেলো এক ঝটকায়। দুঃস্বপ্নের মতো নেইমারের কোমরে গুরুতর চোট, সিলভার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মাঠে নেমে জার্মানির বিপক্ষে সেমিফাইনালে বিধ্বস্ত হলো ব্রাজিল। ৭-১ ব্যবধানে হেরে যাওয়া ম্যাচটিতে স্বাগতিকদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছিলেন অস্কার।
সেই ম্যাচের পর পাদপ্রদীপের আলোটা ধীরে ধীরে হারাতে শুরু করেন তিনি। ব্রাজিল দলেও হয়ে পড়েন অপাংক্তেয়। প্রতিভা ও দক্ষতার অভাব কখনও ছিল না তার। এমনকি সাও পাওলোর সাবেক তারকাকে ভাবা হচ্ছিল ব্যালন ডি’অরজয়ী কাকার উত্তরসূরি হিসেবে। পরতেন ব্রাজিলেরর ১১ নাম্বার জার্সিটাও। অথচ তার বয়সে যখন অনেক ফুটবলার ইউরোপ ফুটবল দাপিয়ে বেড়ান তখন অস্কার নিলেন এক ‘আত্মঘাতি’ সিদ্ধান্ত।
২০১৬ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব চেলসি ছেড়ে পরের বছর জানুয়ারিতে চলে গেলেন ‘অখ্যাত’ চাইনিজ সুপার লিগে। যোগ দিলেন শাংহাইতে। বয়স তখন ২৫ বছর। কেবল অস্কারই নন, স্বদেশি পাওলিনহো, হাল্কও কাড়ি কাড়ি উয়েনের (চাইনিজ মুদ্রা) ‘লোভে’ চলে গেলেন চীনে। দেশটির ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকাও এখন তিনি।
কিন্তু এরপর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্রাজিলের জাতীয় দলে ফেরাটাই যেন নিজের হাতে শেষ করে দেন অস্কার। অবশ্য বয়স এখনও সামনে পড়ে আছে। তবে নিজেই জেনে গেছেন, ব্রাজিলের হয়ে আর হয়তো তার খেলা হবে না। যে জার্সি গায়ে ২০১১ সালে অভিষেকের পর ৪৭ ম্যাচে ১২ গোল করেছেন তিনি।
অবশ্য জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্নটা এখনই বিসর্জন দেওয়ার পক্ষে নন অস্কার। আর সেক্ষেত্রে তিনি বেছে নিতে রাজি চীনকে। নাগরিকত্ব নিয়ে চাইনিজদের সঙ্গে জাতীয় দলে খেলতে চান ২৮ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
স্পোর্টসিন নামের এক ক্রীড়ামাধ্যমকে সে কথায় জানালেন অস্কার, ‘অবশ্যই আমি তা নিয়ে ভাবছি কারণ এখন ব্রাজিল জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া খুব কঠিন। কারণ আমি এখানে (চীন)। তবে চীনে সবাই দেখছে আমি কতো ভাল খেলছি। ’
লাতিন আমেরিকা এবং ইউরোপের ফুটবলের সঙ্গে যে চীনের ফুটবলের দূরত্ব যোজন দূরের তা হয়তো ভালো করেই জানেন অস্কার। এও জানেন, সেরা লিগ দুটোতে না খেললে হলুদ জার্সির স্বাদ নেওয়াটা কতো দুঃসাধ্য। এসব ভেবেই যেন অস্কার চীনের হয়ে খেলার ইচ্ছেটা জানালেন, ‘চীন জাতীয় দলের একজন মিডফিল্ডার দরকার। তাই আমি ভাবছি, আমি তাদের সাহায্য করতে পারি। আমি চীন ভালোবাসি, তবে এখন যে খেলোয়াড়রা জাতীয়তা পরিবর্তন করতে চীন যায়, তারা আরও ভালো করতে পারে। ’
সামনে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ। আসরে জায়গা পেতে হলে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পরীক্ষায় পাস করতে হবে চীনকে। সেই ভাবনা মাথায় রেখে এশিয়ান দেশটি যদি অস্কারের মতো একজন তারকাকে দলে নেয় তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ ২০০২ সালের পর থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চে নেই বর্তমানে ফিফা র্যাংকিংয়ে ৭৬তম স্থানে থাকা দেশটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২০
ইউবি