বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হলো টোকিও অলিম্পিকের। তবে করোনাকালে বৈশ্বিক ক্রীড়া উৎসব হারিয়েছে আগের জৌলুশ।
শুক্রবার টোকিওর অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয় করোনায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো মানুষদের উদ্দেশে শোক প্রকাশের মাধ্যমে। এরপর শুরু হয় জমকালো আয়োজন। চলে আতশবাজির ঝলকানি। জাপানি শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীরা প্রদর্শন করেন নিজেদের ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে। তবে তারা সবাই মুখে মাস্ক পরে পারফর্ম করেন।
টোকিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে সরাসরি উপভোগ করেন মাত্র হাজারখানেক মানুষ। এই হাজারখানেক ভিআইপির মধ্যে ছিলেন জাপানের সম্রাট নারুহিতো। কিন্তু স্টেডিয়ামের বাইরে তখনও আসর বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ চলছিল। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন হাজারো মানুষ। অবাক করা বিষয় হলো, গত ২৪ ঘণ্টায় গেমসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও ১৯ জনের করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে যা প্রায় ১০০ জনের বেশি। নতুন শনাক্তের মধ্যে অ্যাথলেট ৩ জন।
এবার অলিম্পিক মশাল প্রজ্বলন করেন চারবারের টেনিস গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী নাওমি ওসাকা। এই মশালটি নিয়ে প্রায় ২ হাজার মানুষের হাতবদলের পর ৯ জুলাই অলিম্পিক স্টেডিয়ামে আনা হয়। গত ২৫ মার্চ থেকে ফুকুশিমা শহর থেকে শুরু হয় মশাল নিয়ে র্যালি।
গত বছর হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে এক বছর পিছিয়ে শুরু হলো অলিম্পিক। তবে এর আগে ঘটে গেছে বহু ঘটনা। ভিলেজের মধ্যে এবং গেমস সংশ্লিষ্ট অনেকের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে আসর মাঠে গড়ানো নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছিল। এমনকি আসর বাতিলের দাবিতে জাপানে ব্যাপক আন্দোলনও হয়েছে।
তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সব সংশয়কে দূরে ঠেলে দিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। এবারের আসর আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম অলিম্পিয়াড এবং এর নাম রাখা হয়েছে টোকিও ২০২০। এবারের অলিম্পিক রিং তৈরি করা হয়েছে টোকিও ১৯৬৪-এ আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটদের লাগানো গাছের কাঠ থেকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাপানি ভাষার অক্ষর অনুযায়ী মার্চ পাস্টে অংশ নেয় অংশগ্রহণকারী প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধি দল। সবার আগে মাঠে প্রবেশ করে গ্রীস। আধুনিক অলিম্পিকের জনক হওয়ায় ঐতিহ্যগতভাবেই প্রতি আসরে সবার আগে পতাকা নিয়ে মাঠে প্রবেশ করে গ্রীকরা। এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতি দল থেকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী পতাকা নিয়ে ঢোকার অনুমতি পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন সাতারু আরিফুল ইসলাম।
বাংলাদেশ থেকে এবার অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন ৬ জন অ্যাথলেট। তারা চারটি ডিসিপ্লিনে অংশ নেবেন। এগুলো হলো- আর্চারি, সুইমিং, অ্যাথলেটিক্স এবং শুটিং। ৬ অ্যাথলেট হলেন- দুই আর্চার রুমান সানা এবং দিয়া সিদ্দিকী, দুই সাতারু আরিফুল ইসলাম এবং জুনাইনা আহমেদ, একমাত্র ট্র্যাক অ্যাথলেট জহির রায়হান এবং একমাত্র শুটার আব্দুল্লাহেল বাকি।
এবারের অলিম্পিকের পর্দা নামবে আগামী ৮ আগস্ট।
হয়তো দর্শকভর্তি স্টেডিয়াম দেখা যাবে না, থাকবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কড়াকড়ি। তবে এসব সত্ত্বেও এটা অলিম্পিক। পুরো বিশ্বের অ্যাথলেটদের সত্যিকারের মিলনমেলা। যার কোনো তুলনা হতে পারে না।
আরও পড়ুন- ‘অলিম্পিক লরেল’ পেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২১
এমএইচএম