হতাশা আর ইনজুরিতে পড়ে শেষ হতে চলেছিল ক্যারিয়ার। নিতে হয় মানসিক চিকিৎসাও।
মণিপুরের ইম্ফলের প্রত্যন্ত গ্রাম নংবক কাকচিং গ্রামে জন্ম মীরাবাই চানুর। একটা সময় বাড়ির রান্নার জন্য জঙ্গলে কাঠ কুড়াতে যেতে হতো তাকে। ভারী কাঠের বোঝা তুলতে পারতেন না মীরাবাইয়ের ভাই। কিন্তু মেয়ে হয়েও অনায়াসে সেটা কাঁধে নিয়ে মীরাবাই চলে আসতেন বাড়িতে। তখনই তার বাবা-মা বুঝে যান, মেয়ের শারীরিক সামর্থ্য আর পাঁচজনের চেয়ে বেশি। তাই ভর্তি করিয়ে দেন মণিপুরের এসএআই একাডেমির ভারোত্তোলনে।
২০১৪ গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে রুপা জেতা সেই মীরাবাই অনেক আশা নিয়ে যান ২০১৬ রিও অলিম্পিকে। কিন্তু ক্লিন অ্যান্ড জার্ক বিভাগে তিনবারই ব্যর্থ হন ওজন তুলতে!
এবারের অলিম্পিকে এটাই প্রথম পদক ভারতের। এই ইভেন্টে সোনা চীনের জিহু হউয়ের। ভারোত্তোলনে সর্বশেষ ২০০০ সালে ভারতের হয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন কর্ণম মালেশ্বরী। ২১ বছর পর এই ইভেন্টে আবারও ভারতকে পদক এনে দেওয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন মীরাবাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টুইট, ‘এর চেয়ে বেশি খুশির কিছু হতেই পারে না। ভারতের সম্মান বাড়িয়ে দিলেন চানু। ’
এমন সাফল্যটা মীরাবাই উৎসর্গ করলেন দেশকে, ‘রিও থেকে ফোন করে বাড়িতে জানিয়েছিলাম খেলাটা ছাড়তে চাই, যা শুনে অজ্ঞান হয়ে যান আমার মা। তবে পরিবার পাশে ছিল বলে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। আমার এই অর্জন উৎসর্গ করছি দেশবাসীর প্রতি।
এদিকে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী চানুকে এক কোটি টাকা দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে চানু রেলের টিকিট পরীক্ষক। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, চানুকে আর টিকিট পরীক্ষা করতে হবে না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তার জন্য চমক অপেক্ষা করে আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২১
এমএমএস