ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়: সুর কৃষ্ণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়: সুর কৃষ্ণ

প্রথমবারের মত বাংলাদেশে আয়োজিত হয়েছে পেশাদার বক্সিং প্রতিযোগিতা। মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী স্টেডিয়ামে সাউথ এশিয়ান প্রফেশনাল বক্সিং ফাইট নাইট— দ্য আল্টিমেট গ্লোরিতে নিজের জাত চিনিয়েছেন বাংলাদেশের বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ মে)প্রথমবার আয়োজিত এই আসরের ৬১ কেজি ওজন শ্রেণিতে (লাইট ওয়েট)বাংলাদেশের সুর কৃষ্ণ চাকমা চার রাউন্ডের খেলায় নেপালের শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মহেন্দ্র বাহাদুর চাঁদকে হারিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন হয়ে নন্দিত হয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের কাছে। বাংলানিজটোয়েন্টিফোর’কে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সুর কৃষ্ণ চাকমা।

প্রশ্ন- সুর কেমন আছেন? পেশাদার বক্সিংয়ের শুরুতেই সাফল্য এনে দিয়েছেন দেশকে। সকলেই প্রশংসা করছে, এই অনুভূতিটা কেমন?

উত্তর-জি ভালো আছি। আসলে সাফল্য সবসময়ই ভালো লাগে। এবারের বিষয়টা অন্যরকম। এই জয়ের পর মন্ত্রী থেকে শুরু করে ক্রীড়াঙ্গনের অনেক তারকাই আমাদের প্রশংসা করছেন। এই অনুভূতিটা অন্যরকম। এতে করে আরও ভালো খেলার অনুপ্রেরণা পাচ্ছি।

প্রশ্ন- আগামীতে পেশাদার বক্সিংয়ে আপনার লক্ষ্য কি?

উত্তর- আমি চাইলেই এখন পেশাদার বক্সিংয়ের বড় আসর গুলোতে খেলতে পারবো না। এটা ধাপ অনুযায়ি খেলতে হবে। এখন আমার লক্ষ্য আরও বেশি পেশাদার ম্যাচ খেলে ডব্লিইবিসি এশিয়া টাইটেল জয় করা। এশিয়ার শ্রেষ্টত্বের লড়াইয়ে শিরোপা জয় করা। এশিয়া টাইটেল হলো এশিয়ার বক্সিংয়ে বিশ্বকাপ জয় করার মত।

প্রশ্ন- মহেন্দ্র চাঁদকে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছেন। প্রতিপক্ষ হিসেবে মহেন্দ্রকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

উত্তর- খুব কঠিন লড়াই করেই জিততে হয়েছে। মহেন্দ্র চাঁদ নেপালের আটবার ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন। তার বিপক্ষে খেলাটা সহজ ছিলো না।

প্রশ্ন-প্রফেশনাল এই বক্সিংয়ের জন্য আপনার প্রস্তুতি কেমন ছিল? এই রেজাল্ট কি প্রত্যাশিত ছিল?

উত্তর- আসলে আমি দুই মাস আগে থেকেই জাতীয় দলের অনুশীলনে ছিলাম। ফিটনেস সেখান থেকেই ছিল। আর দুই সপ্তাহ আগে থেকে ফিলিপাইনের কোচ এডুয়ার্ডোর সঙ্গে অনুশীলন করেছি। প্রতিপক্ষকে নিয়ে আমরা যথেষ্ট হোম ওয়ার্ক করেছি।

প্রশ্ন-এতবড় অর্জনের পর ফেডারেশন বা সরকারের কাছ থেকে কেমন সাড়া পেলেন? কোনও আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি অথবা কোনও পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি কি পেয়েছেন?

উত্তর- সত্যি বলতে তেমন কিছুই পাইনি। আমাদের পেশাদার বক্সিং এগিয়ে যেতে পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন। দেশের বড় প্রতিষ্ঠান গুলো যদি এগিয়ে আসে তাহলে আমাদের আরও ভালো করার সুযোগ থাকবে। আর্থিক ভাবে বক্সিংয়ে তেমন সুযোগ সুবিধা নেই। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়েছি। এখনো কোন চাকরি করছি না। বক্সিং খেলছি। এখানে শুধু আনসারের ভাতা প্রাপ্ত খেলোয়াড় হিসেবে খেলছি। আর্থিক সুযোহ সুবিধা এখানে তেমন নেই। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

প্রশ্ন- পেশাদার বক্সিং আয়োজিত হলো। দেশে ভালো সাড়া পেয়েছেন আপনারা। প্রথমবারই নিজেদের প্রমাণ করেছেন আপনারা। আগামীতে আপনাদের প্রত্যাশা কি?

উত্তর- আসলে আমাদের দেশে ২০১০ সালের পর তেমন কোনও আর্ন্তজাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়নি। ২০১০ সালে এসএ গেমস আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে তো বক্সিং ছাড়াও আরও অনেক খেলা ছিল। এরপর আর তেমন বড় কোনও আসর আয়োজন করা হয়নি। নিয়মিত বড় আসর আয়োজন করলে তো আমাদের আরও উন্নতি করার সুযোগ থাকে।

প্রশ্ন-এতদিন পর পেশাদার বক্সিংয়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। আরও আগে কি এইধরনের আয়োজন করা উচিত ছিল বলে মনে করেন?

উত্তর- আসলে সব কিছুতেই উন্নতির যায়গা আছে। যেমন ধরেণ আপনি স্কুলে পড়লেন এরপর কলেজে পরের ধাপ বিশ্ববিদ্যালয়। অ্যামেচার বক্সিং কলেজে পরার মত। এরপর জানার জন্য আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে। পেশাদার বক্সিংয়ে প্রবেশটাও তেমনই। দেরিতে হলেও বাংলাদেশ পেশাদার বক্সিংয়ের যুগে প্রবেশ করেছে। এখন আমার আরও এগিয়ে যেতে পারবো। সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেল আমাদের জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ২৩ মে ২০২২
এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।