ঢাকা, বুধবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১১ সফর ১৪৪৭

বাংলানিউজ স্পেশাল

অভ্যুত্থানের এক বছর

রুগ্ন থেকে সচল আর্থিক খাত, তবে সাবলীল নয়

জাফর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:১৭, আগস্ট ৫, ২০২৫
রুগ্ন থেকে সচল আর্থিক খাত, তবে সাবলীল নয় ‘ব্যাংকপাড়া’ খ্যাত রাজধানীর মতিঝিল | সংগৃহীত ছবি

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া গভীর সংকট কাটিয়ে দেশের আর্থিক খাতকে ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে আনা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আর্থিক পরিবর্তনের জন্য সময় লাগে।

আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান, প্রক্রিয়া ও ব্যক্তি পর্যায়ে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা গভীরভাবে প্রোথিত। তবে কিছু সৎ ও দক্ষ মানুষ আছেন, তাদের মাধ্যমেই আমরা সংস্কারের চেষ্টা করছি। এরইমধ্যে আমরা আইসিইউ থেকে কেবিনে, আর কেবিন থেকে বাড়িতে ফিরেছি বললেও ভুল হবে না।

অর্থনীতি ‘হাসপাতালের কেবিন থেকে বাড়ির পথে’ রওনা দিয়েছে বটে, কিন্তু পথে খানাখন্দ থাকার কারণে বাড়িতে পৌঁছাতে সময় লাগছে বলে মনে করেছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।

বিগত সরকারের সময়ে আর্থিক খাত পুরোই ভেঙে পড়ে। শৃঙ্খলা ছিল না বিন্দুমাত্র। ক্ষমতাধররা টাকা নিয়েছেন ফেরত না দেওয়ার জন্য, বলারও কেউ ছিল না— এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। একটি শিল্পগোষ্ঠীর করপোরেট অফিস হয়ে উঠেছিল ৮টি ব্যাংকসহ সম-সংখ্যক নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। অধিকাংশ ব্যাংকই অব্যবস্থাপনায় ও নামে-বেনামে খেলাপি ঋণের ভারে নুয়ে পড়ে।

সবচেয়ে বেশি সংস্কার হচ্ছে ব্যাংক খাতে

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম যে কাজটি শুরু করে, তা হলো লুটপাট বন্ধ করা। পালিয়ে যাওয়া চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ব্যাংকগুলোতে নতুন করে পর্ষদ গঠন করা হয়। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলারের অবমূল্যায়ন রোধ, বৈদেশিক মুদ্রার পতন ঠেকানো এবং অর্থ পাচার বন্ধের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে আসতে থাকে স্থিতিশীলতা।

এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্ত খাত হিসেবে দেখা গেছে আর্থিক খাতকে। শুরুতে আতঙ্ক ছিল— এতগুলো সংকটগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান নিয়ে জনগণের আস্থা কীভাবে ধরে রাখা যাবে। সেই জায়গা থেকে ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বেশি সংস্কার দেখা গেছে। অনেক ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুনভাবে গঠন করা হয়েছে। তাদের তারল্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যাতে ‘রক্তক্ষরণ’ বন্ধ হয়। ”

তিনি আরও বলেন, “এসব প্রতিষ্ঠানের সংকট নিরসনের জন্য আইনি সংস্কার প্রয়োজন ছিল, যা করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স’। ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা মূল্যায়নের প্রয়োজন ছিল। ছয়টি ব্যাংকের সম্পদের মান পর্যালোচনা করা হয়েছে, আরও ১১টি ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা করা হবে। যদিও এখনো নিষ্পত্তির কোনো নির্দিষ্ট মডেল চূড়ান্ত হয়নি, তবে জানা গেছে, পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার মডেল তৈরি হচ্ছে। ”

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যে কয়টি খাত দৃশ্যমান উন্নতি করেছে, তার মধ্যে আর্থিক খাত অন্যতম বলে মনে করেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হক।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, “এখানে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। যেভাবেই হোক, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে— এটা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। ”

“ব্যাংক খাতে যে ব্যাপক লুটপাট হয়েছিল, তা আপাতত বন্ধ করা গেছে। তবে এটি সাময়িক কি না, কিংবা রাজনৈতিক চাপ থাকলে ভবিষ্যতে কী হবে— সেটা ভিন্ন আলোচনা। ”

ফজলুল হক আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে সংস্কার চলছে। এ ব্যাপারে গভর্নরকে বিশেষভাবে ক্রেডিট দিতে চাই। এই সরকারের সময়ে তার ভূমিকা দৃশ্যমান। তিনি ভালো কিছু করছেন বা করার চেষ্টা করছেন।

১২টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ১২টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুনভাবে পুনর্গঠন করা হয়। মূলত এসব ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা গা-ঢাকা দেন কিংবা দেড় দশকের দখলদারিত্বে প্রতিষ্ঠানগুলো বিপর্যস্ত ছিল। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য ও অঙ্গীকার স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। এর ফলে কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং ফিরতে থাকে শৃঙ্খলা। তবে এখনো কিছু ব্যাংকে সংকট রয়ে গেছে। সরকার সেগুলোর একীভূতকরণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে এগোচ্ছে।

একইসঙ্গে সরকার কঠোর বার্তার মাধ্যমে অর্থ পাচার রোধে নজরদারি শুরু করে। এর ফলে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে। অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, “পাচারকারীরা নিজেরাই পাচার হয়ে যাওয়ায় টাকা পাচার বন্ধ হয়ে যায়। ”

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় উত্তরাধিকার সূত্রে উচ্চ মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি পায়, যা দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দ্বিগুণ অঙ্ক (ডাবল ডিজিট) ছুঁয়ে ফেলে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সরকার সুদের হার বৃদ্ধি করে। এতে একদিকে বাজারে টাকার সরবরাহ কমে, অন্যদিকে পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধিতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। যদিও এর ফলে বেসরকারি বিনিয়োগে কিছুটা ভাটা পড়ে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।

তবে সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশা অনুযায়ী না কমলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুটি প্রধান কাজ— এক. মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং দুই. আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। আমরা যে অবস্থা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলাম, তার তুলনায় এখন অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। ”

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন ঠেকিয়ে উন্নতি

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছিল। সবশেষ রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল, যার মধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ছিল আরও কম। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নানা উদ্যোগ নেওয়ার ফলে ১১ মাসের মাথায় রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি (বিপিএম৬) অনুসারে বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার।

বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ছয় মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। উল্লেখযোগ্য যে, আগের সরকার আদানি ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে নেওয়া জ্বালানির বিপুল পরিমাণ বকেয়া রেখে গিয়েছিল, যা বর্তমান সরকার পরিশোধ করেছে।

রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি

রপ্তানি আয়ের ঊর্ধ্বগতির ফলে পেমেন্ট ব্যাল্যান্সের ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৮.২৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ৪৪.৪৬ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ৮.৫৬ শতাংশ।

সদ্য বিদায়ী জুলাই মাসেও রপ্তানি আয় এসেছে ৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।

মূলত রেমিট্যান্স এবং আমদানি-রপ্তানি আয়ের মধ্য দিয়েই অর্থ পাচার ঘটে। আমদানির সময় অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে (অভার ইনভয়েসিং) এবং রপ্তানির সময় কম মূল্য দেখিয়ে (আন্ডার ইনভয়েসিং) পাচার হয়ে থাকে। বর্তমান সরকার বিদেশে থাকা বিভিন্ন রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের পাচারকৃত সম্পদ অবরুদ্ধ করেছে। ফলে এখন পাচারকারীরা আর আগের মতো নির্ভার নেই। রপ্তানি আয়ের টাকা দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এবং আমদানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে পাচার রোধে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এর ফলে একদিকে রপ্তানি আয় বাড়ছে, অন্যদিকে আমদানি ব্যয় হ্রাস পাচ্ছে।

প্রবাসী আয়ে সুবাতাস

প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার সবচেয়ে বড় উৎস, যেখানে সরকারকে কোনো বাড়তি বিনিয়োগ করতে হয় না, অথচ বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০.৩২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। সদ্য বিদায়ী জুলাই মাসেও ২.৪৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

রেমিট্যান্স ব্যবহৃত হতো অর্থ পাচারের মাধ্যম হিসেবেও। পাচারকারীদের কাছে ডলারের চাহিদা থাকায় হুন্ডি চক্রের মাধ্যমে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা হতো। এতে করে প্রবাসীর পরিবার দেশে টাকা পেলেও, সরকার বৈদেশিক মুদ্রা পেত না। কেবল বৈধ পথে পাঠানো রেমিট্যান্সই রিজার্ভে যুক্ত হতো।

তবে বর্তমানে বিদেশে পাচারকারীদের সম্পদ জব্দ এবং অনেক পাচারকারী নিজেই ‘পাচার হয়ে যাওয়ায়’ হুন্ডি ব্যবসার দাপট কমে গেছে। এতে বৈধ রেমিট্যান্স বেড়েছে এবং রিজার্ভে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এখন ব্যাংকগুলো নির্দিষ্ট অংশ ডলার নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করছে, যা সরাসরি রিজার্ভে যোগ হচ্ছে।

যেখানে সংকট এখনো পায়ে পা দিয়ে এগোচ্ছে

বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার ফলে কিছু ক্ষেত্রে সুফল মিলেছে, কিছু ক্ষেত্রে সফলতা আসার পথে রয়েছে। তবে একাধিক ক্ষেত্রে এখনো সংকট বিদ্যমান। অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, অর্থনীতি ‘হাসপাতালের কেবিন থেকে বাড়ির পথে’ রওনা দিয়েছে বটে, কিন্তু পথে খানাখন্দ থাকার কারণে বাড়িতে পৌঁছাতে সময় লাগছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা, আস্থার সংকট এবং সুদহার বৃদ্ধি— এই তিনটি প্রধান কারণে দেশে নতুন করে বিনিয়োগ আসছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বাস্তবতা মেনে বেসরকারি বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সরকারি ব্যয়েও কাটছাঁট হয়েছে। পাশাপাশি, নতুন বৈদেশিক বিনিয়োগও খুবই সীমিত। যেটুকু হচ্ছে, তা মূলত আগের মুনাফা পুনঃবিনিয়োগ কিংবা আন্তঃকোম্পানি ঋণের মাধ্যমে। ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রায় বন্ধের পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এ প্রসঙ্গে বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, “দৃষ্টিভঙ্গি একটু প্রসারিত করে দেখলে বোঝা যাবে, এই সময়ে প্রাইভেট সেক্টরকে প্রায় উপেক্ষা করা হয়েছে— এটা আমাদের হতাশার জায়গা। বেসরকারি খাত মানেই যে লুটেরা, তা নয়। সরকার যাকে পছন্দ করে, করতে পারে; কিন্তু অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো বেসরকারি খাত। শিল্প খাতে সংস্কার, উন্নয়ন এবং নীতি প্রণয়নে বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংলাপ আরও ফলপ্রসূ হওয়া উচিত। ”

বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানিও কমে গেছে। এর ফলে আমদানি ব্যয় কমেছে এবং রিজার্ভে চাপ কমেছে। কিন্তু এটি অর্থনীতির প্রকৃত উন্নতির চিত্র নয়।

রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিল্প খাতের বিকাশ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি— এই তিনটি ক্ষেত্রেও সমান গুরুত্ব দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি। তিনি বলেন, গত এক বছরে অর্থনীতির অন্যতম নেতিবাচক দিক হলো, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি। বরং বিভিন্ন কারণে প্রচুর মানুষ চাকরি হারিয়েছে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে— যদিও অনেক কিছু অনিবার্য ছিল, তবু তা স্বীকার করা প্রয়োজন।

রাজনৈতিক কারণে অনেকে কারাবন্দি বা দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। তাদের অনেকেই বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক, যেগুলোর অনেকগুলো বন্ধ হয়ে গেছে কিংবা ধ্বংস হয়েছে— অগ্নিসংযোগসহ নানা কারণে। ফলে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছে। এর পুনরুদ্ধার হয়নি, আর নতুন চাহিদার সঙ্গে তাল মেলানোও সম্ভব হয়নি।

সরকারের দ্বিতীয় বর্ষে প্রবেশের প্রাক্কালে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান হওয়া উচিত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এজন্য বেসরকারি খাতকে উপেক্ষা না করে সম্পৃক্ত করতে হবে। একে উপেক্ষা করে নয়, বরং অর্থনীতির অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েই এগোতে হবে বলে মনে করেন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক।

জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।