ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

দুর্বল হচ্ছে তিতলি, ফের তাপমাত্রা বাড়বে ২-৩ ডিগ্রি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৮
দুর্বল হচ্ছে তিতলি, ফের তাপমাত্রা বাড়বে ২-৩ ডিগ্রি প্রতীকী ছবি

ঢাকা: ভারতের স্থলভাগে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’। সেটি লঘুচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এলাকা দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গত তিন-চার দিন দেশে মেঘলা আকাশসহ বৃষ্টি-বাদল পার করে তাপমাত্রা কমেছিল। তবে আবারও সারা দেশে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।


 
ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণে আবহাওয়া অধিদফতরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আসছিল।
 
শনিবার বিকেলে এই সিরিজের সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (নং-২১) শনিবার বলা হয়েছে, উড়িষ্যা-গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবর্তীতে লঘুচাপে পরিণত হয়ে বিকেল ৩টায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে গুরুত্বহীন হতে পারে।
 
আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, বাতাস বা ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ১৭-৩০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকলে তাকে লঘুচাপ বলে। ৩১-৪০ এর মধ্যে থাকলে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, ৪১-৫০ এর মধ্যে থাকলে নিম্নচাপ, ৫১-৬১ এর মধ্যে থাকলে গভীর নিম্নচাপ, ৬২-৮৮ থাকলে ঘূর্ণিঝড়, ৮৯-১১৭ এর মধ্যে থাকলে তীব্র ঘূর্ণিঝড়, ১১৮-২১৯ এর মধ্যে থাকলে হ্যারিকেনের তীব্রতা বা গতি সম্পন্ন এবং ২২০ বা তার অধিক থাকলে সুপার সাইক্লোন বলা হয়।
 
ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ সর্বশেষ হ্যারিকেনের তীব্রতা (বাতাসের গতি ১১৮-২১৯ এর মধ্যে) নিয়ে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছিল। এতে ঘরবাড়ি ক্ষয়-ক্ষতিসহ অন্তত ৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।  
 
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে।
 
উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
 
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
 
সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
 
গত কয়েক দিন প্রায় সারা দেশে বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৪, ময়মনসিংহে ১০, চট্টগ্রামে ১২, সিলেটে ১৭, রাজশাহীতে ৬, রংপুরে সামান্য, খুলনায় ৩৩, বরিশালে ২৬ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। টেকনাফে সর্বোচ্চ ২২২ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
 
২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় সর্বোচ্চ ২৭.৯ ও সর্বনিম্ন ২৩ ডিগ্রি, ময়মনসিংহে ২৪.৫ ও ২২.৭ ডিগ্রি, চট্টগ্রামে ২৫.৩ ও ২২.৬ ডিগ্রি, সিলেটে ২৩.৮ ও ২০.৪ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ২৫.৮ ও ২২.২ ডিগ্রি, রংপুরে ২৮.৫ ও ২২.৬ ডিগ্রি, খুলনায় ২৯ ও ২৩ এবং বরিশালে ২৮.২ ও ২৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর সর্বনিম্ন সিলেটে ২০.৪ ডিগ্রি এবং রংপুরের ডিমলায় সর্বোচ্চ ৩০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
 
পূর্বাভাস বলছে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
 
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, এই সময়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে এবং তাপমাত্রা বাড়তে পারে। আর বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।