গতকাল দীর্ঘ টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি ঘটালেন ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার বিরাট কোহলি। স্মৃতিময় এই যাত্রা থামানো কঠিন হলেও এই সময়কেই সঠিক বলে মনে করেছেন তিনি।
ডিসেম্বর মাসে রঞ্জি ট্রফিতে তখন দিল্লির হয়ে কোহলি লড়ছিলেন কর্নাটকের বিপক্ষে। দলের ফলো-অন এড়াতে উল্লেখযোগ্য রান করেছেন তিনি। সকালে যখন শুনতে পান পিতার মৃত্যুর খবর, তখনও খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গ্রাহাম বেনসিঙ্গারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
কোহলি বলেন, ‘তখন চারদিনের ম্যাচ চলছিল। পরের দিন মাঠে নামার কথা ছিল আমার। রাত প্রায় আড়াইটায় এই খবর পাই। তখন আমি জেগে উঠি, বুঝতে পারছিলাম না কী করব। মনে হয়েছিল, বাবার শেষ নিঃশ্বাস আমি নিজের চোখে দেখছি। ’
‘পরে তাকে হাসাপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আর বাঁচানো যায়নি। আমার পরিবার ভেঙে পড়লেও আমি কাঁদতে পারিনি। একেবারে আবেগহীন হয়ে পড়েছিলাম। সকালে কোচকে ফোন করে সব বললাম এবং জানালাম যে খেলতে চাই, কারণ ম্যাচ ছেড়ে যাওয়াটা আমার কাছে কখনও গ্রহণযোগ্য ছিল না। ’
এই ঘটনার পর কোহলি যখন খেলতে যান, ড্রেসিংরুমে সতীর্থরা স্বান্ত্বনা দেওয়ার সময় তিনি ভেঙে পড়েন। এটাই যে তার জীবনে ক্রিকেটকে প্রাধান্য দেওয়ার বড় কারন ছিল সেটাই জানান সাবেক এই অধিনায়ক, ‘এখন মনে হয়, এই ঘটনাই জীবনের সবচেয়ে বড় মোড় ছিল। শেষকৃত্যের পর ভাইকে কথা দিয়েছিলাম—ভারতের হয়ে খেলব। বাবা চাইতেন আমি ভারতের হয়ে খেলি। সেই কথা মনে করেই বাকি সব আলাদা করে দিয়েছিলাম কেবল ক্রিকেট ছাড়া। ’
কোহলির এই অদম্য ইচ্ছেশক্তি ও দৃঢ় মানসিকতাই তাকে নিয়ে গিয়েছে এতটা ওপরে। বাবার মৃত্যুর কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি নেতৃত্ব দেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। জেতান বিশ্বকাপ। একই বছর ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তার। ২০১১ সালে ভারতের বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডেও ছিলেন তিনি। এরপর টেস্ট অভিষেক এবং একের পর এক রেকর্ড গড়া শুরু করেন।
আরইউ