রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশজুড়ে যখন শোক ও ক্ষোভ, তখন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরপরই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে কিছু মর্মান্তিক ছবি ও ভিডিও, যেখানে দেখা যায় দগ্ধ শিশু, আতঙ্কিত অভিভাবক, পোড়া ইউনিফর্মে ছোটাছুটি করা শিক্ষার্থীরা।
নিজের ফেসবুক পেইজে সাকিব লিখেছেন,
‘আজ মাইলস্টোন স্কুলে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সবাইকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে ভবিষ্যতের স্বপ্নরা গড়ে ওঠে, সেটাই আজ পরিণত হয়েছে শোকস্তব্ধ এক বেদনার স্থলে। এক নিমিষে ঝরে গেছে অনেক তরুণ প্রাণ, নিভে গেছে অগণিত স্বপ্ন। একজন বাবা হিসেবে, একজন বাংলাদেশি হিসেবে, এবং একজন মানুষ হিসেবে এই শোক, এই যন্ত্রণা আমি গভীরভাবে অনুভব করছি। প্রতিটি নিঃশেষিত পরিবারের কষ্ট আমার নিজের বলেই মনে হচ্ছে। আসুন, আমরা সবাই মিলে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং আহতদের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করি। এই কঠিন সময়ে আমরা যেন একে অন্যের পাশে দাঁড়াই। ’
এর আগে জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফেসবুকে লিখেছেন,
‘যা হয়েছে ও হচ্ছে, সবকিছুই প্রচণ্ড বেদনাদায়ক। আমাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে, আমরা বিধ্বস্ত। আপাতত সংবাদকর্মীদের প্রতি অনুরোধ, বিশেষ করে টিভি ও ডিজিটাল মিডিয়ার কাছে অনুরোধ—আক্রান্ত বাচ্চাদের রক্তাক্ত ও আহত অবস্থার এসব ছবি-ভিডিও লাইভ দেখাবেন না। দেখালেও অন্তত ঝাপসা করে দেবেন, দয়া করে। ওরা আমাদের বাচ্চা। ওদের জন্য আমাদের সবটুকু প্রার্থনা। ’
আরেক সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা লেখেন,
‘উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত ও মাইলস্টোন স্কুল-কলেজে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা আমাদের সকলকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক, সহানুভূতি জানানোর ভাষা নেই। আহত সকলের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। এই কঠিন সময়ে আসুন আমরা সবাই একসঙ্গে প্রার্থনায় শামিল হই— হে আল্লাহ, সকলকে হেফাজতে রাখুন এবং এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে আমাদের রক্ষা করুন। আমিন। ’
আর বর্তমান টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস লিখেছেন,
‘উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনায় আহত ও নিহত সকলের প্রতি আমাদের হৃদয়ছোঁয়া প্রার্থনা ও সহমর্মিতা। আশা করি শান্তি, শক্তি ও আরোগ্য পৌঁছে যাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে। ’
এদিকে বাংলাদেশ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এই বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৯ জন, আহত হয়েছেন ১৬৪ জন। নিহতদের মধ্যে ১২ জনের মরদেহ রয়েছে সিএমএইচে। বাকি সাতজনের মধ্যে দুজন বার্ন ইনস্টিটিউটে, দুজন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে, দুজন লুবনা জেনারেল হাসপাতালে এবং একজন উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বিমানটির পাইলট, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরও আছেন।
এমএইচএম