ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

দাপুটে লঙ্কানদের সামনে উজ্জীবিত কিউইরা

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
দাপুটে লঙ্কানদের সামনে উজ্জীবিত কিউইরা

ঢাকা: আগে ছয়বার সেমিফাইনাল খেলেছে, কিন্তু কোনোবারই ফাইনালে যেতে পারেনি তারা। ভালো কিছু করার এটাই সেরা সুযোগ তাদের।

নিজেদের মাটিতে ৯২’র বিশ্বকাপে যেভাবে সমর্থন পেয়েছে তা পেলে বিশ্বকাপটা উঠতে পারে তাদের হাতে।  

স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডে নিয়ে এভাবেই নিজের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অলরাউন্ডার রিচার্ড হ্যাডলি। নিউজিল্যান্ডের কিংবন্তি এই ক্রিকেটার তার নিজের দেশ নিয়ে যতটা আশাবাদী তার প্রায় বিপরীত অবস্থা প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার।   

বলা হয়, শ্রীলঙ্কার বড় হয়ে ওঠার প্ল্যাটফর্মই নাকি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে বরাবরই দাপুটে তারা। তবে দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নন লঙ্কান ভক্তরা।
 
শনিবার এই দু‘দলের ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১১তম আসরের। নিজেদের চিরচেনা পরিবেশ ও দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিচারে উদ্বোধনী ম্যাচে ব্ল্যাকক্যাপদের ফেবারিট মানছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। তবে সাঙ্গাকারা-জয়বর্ধনের মতো অভিজ্ঞতরা জ্বলে উঠলে বিপদ যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই।

বিশ্বকাপের আগে শ্রীলংকাকে ৫-২ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে উজ্জীবিত কিউইরা। পাকিস্তানকেও কুপোকাত করেছে ঘরের মাটিতে। প্রস্তুতি ম্যাচে হারিয়েছে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এখন প্রতিপক্ষ লঙ্কাবধের অপেক্ষায় ব্লাকক্যাপরা। স্বাগতিক হিসেবে বিশ্বকাপ মিশন শুরুর আগে লঙ্কানদের হারানোর সুখস্মৃতি তাদের।
        
নিজের দেশ নিউজিল্যান্ড সম্পর্কে হ্যাডলির মতো অলরাউন্ডারের উচ্ছ্বাসটাও অনেক বেশি। অবশ্য এই উচ্ছ্বাসের পেছনে তার যুক্তিও রয়েছে। বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডের প্রস্তুতিটা হয়েছে দারুণ। দলের ফর্মও দুর্দান্ত। ব্যাটিং, স্পিন ও ফাস্ট বোলিং এবং উইকেট কিপিংসহ সবদিকেই গোছানো একটি দল স্বাগতিকরা। হ্যাডলি বলছেন, এটাই সম্ভবত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের সেরা দল।     

সবচেয়ে বেশি ছয়বার সেমিফাইনাল খেলেও ফাইনাল না খেলা দলটির নাম নিউজিল্যান্ড। দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিশ্বকাপের ‘ডার্ক হর্স’ নিউজিল্যান্ডকে এবারের ফেবারিটের তালিকায় ফেলাই যায়। দলের সঙ্গে চেনা মাঠ, বোলিং, ব্যাটিং নিয়ে দলটি যথেষ্ট ব্যালান্সড।  

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে বলা হয়- দলটি বড় হয়ে ওঠার প্ল্যাটফর্মই বিশ্বকাপ। সুতরাং সাম্প্রতিক সময়টি খারাপ গেলেও বিশ্বকাপে তারা ঝলসে উঠলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৩, ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয় সিংহলিজরা। ছোট দল হিসেবে আগের বিশ্বকাপগুলোতে বিদায় নেওয়ায় কেউই তাদের পাত্তা দেয়নি। পরের বিশ্বকাপেই (১৯৯৬) চ্যাম্পিয়ন। তাক লাগানো পারফরম্যান্স। যদিও ৭৯ ও ৮৩ বিশ্বকাপে যথাক্রমে ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল তারা।

৯২ এর বিশ্বকাপের পর থেকে শ্রীলঙ্কা আর পেছনে ফিরে তাকায়নি। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল, ২০০৭ ও ২০১১ বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলেছে। অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলা ম্যাথুসের মতে, অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের সমন্বয়ে তারুণ ব্যালান্সড একটি দল তাদের। দেশকে আরেকবার বিশ্বকাপ এনে দিতেই চেষ্টা থাকবে তার।

শ্রীলংকা বিশ্বকাপের আগে থেকেই নিউজিল্যান্ডে রয়েছে। ওয়ানডেতে তারা নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ ৫-২ এ হেরেছে। এমনকি প্রস্তুতি ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছেও হেরেছে তারা। পরিসংখ্যান দিয়ে অবশ্য শ্রীলঙ্কার মতো দলকে বিচার করা সহজ নয়।

 নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার রিচার্ড হ্যাডলির মতে, শ্রীলঙ্কার রয়েছে দুর্দান্ত ব্যাটিং সার্মথ্য। বড় স্কোর করার ক্ষমতাও রয়েছে তাদের। সিংহলিজদের দুশ্চিন্তার জায়গা বোলিং। লাসিথ মালিঙ্গা ফিট হয়ে গেলে গত সিরিজের চেয়ে অনেক বেশি লড়াই করতে পারবে। তাদের হারানোটা তখন সহজ হবে না।   

যতই ব্যালান্সড দল হোক না কেন কিউইদের বারবার সেমিফাইনাল থেকে ফিরে আসার বিষয়টি চিন্তারও বটে। অস্ট্রেলিয়ার উইকেট ব্যাটিংবান্ধব হলেও নিউজিল্যান্ডের মাঠে ব্যাটসম্যান ও বোলাদের জন্য সমান সুযোগ থাকবে। তাই মাঠের লড়াই হবে শেষ কথা-পরিসংখ্যান নয়।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।