ঢাকা: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের পর অনেকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়েছিলেন। ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজে আইসিসির তদন্ত দাবি করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে টাইগারদের সিরিজ জয়ের পরও।
লিটল মাস্টারের মতে, বাংলাদেশ প্রোটিয়াদের কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েছিল। কিন্তু পরের দু‘টো ম্যাচে ব্যাট এবং বলে সুপার পারফরম্যান্স করে সহজেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে
সানি বলে পরিচিত ভারতের সাবেক অধিনায়ক গাভাস্কার বরাবরই নিজেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্ত বলে পরিচয় দেন। টাইগাররা হোঁচট খেলে তিনি এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ যোগান। আবার ভালো খেললে প্রশংসায় ভাসাতে এতটুকুন কৃপণতাও দেখান না।
টাইগারদের কীর্তির গুনগান গেয়েই রোববার (১৯ জুলাই) ভারতের বাংলা দৈনিক আজকালে একটি কলাম লেখেন সানি। ‘এবার নিশ্চয়ই ওরা চুপ করবেন’ শীর্ষক এ কলামে ভারতের সাবেক অধিনায়ক বাংলাদেশের বিগত দু’ সিরিজ জেতার পূর্ণ কৃতিত্ব দেন।
গাভাস্কার বলেন, “যারা বলেছিলেন, পাকিস্তান এবং ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয় ফ্লুকে ছিল, তারা এবার নিশ্চয়ই চুপ করে যাবেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজে বাংলাদেশের অসাধারণ জয়ের পর। প্রোটিয়াদের কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের দু’টো ম্যাচে ব্যাট এবং বলে সুপার পারফরম্যান্স করে সহজেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। যারা বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতে চাইছেন না, তারা বলার চেষ্টা করবেন, এবার তাদের বিদেশে জিতে দেখানো উচিত। যেমন অন্যান্য দেশগুলো বিদেশের মাটিতে নিয়মিত জেতে। ১৯৭০–এর মাঝামাঝি থেকে ৯০–এর মাঝামাঝি পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ৯০–এর মাঝামাঝি সময় থেকে ২০০৫–এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ধারাবাহিকভাবে বিদেশের মাটিতে জয় পেয়েছে। অন্য দলগুলোও বিদেশে জিতেছে, কিন্তু এই দু’টো গ্রেট দলের মতো নিয়মিত নয়। তাই শুধু বাংলাদেশকেই বিদেশের মাটিতে জিততে বলার কোনো মানে নেই। ”
টাইগার দলের তরুণ তুর্কি মুস্তাফিজুরকেও প্রশংসায় ভাসান গাভাস্কার। সানি লেখেন, “কেউ কেউ হঠাৎই মুস্তাফিজুরের মধ্যে দুর্দান্ত সম্ভাবনা খুজে পেয়েছেন। তারা বলছেন, এবার দেখার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দ্বিতীয় পর্বে ও কীভাবে সাড়া দেয়। প্রথম পর্বে মুস্তাফিজুর ছিল অচেনা, ফলে বিপক্ষের কাছে জানা সম্ভব ছিল না, কোথায় ওর শক্তি, কোথায় ওর দুর্বলতা। কিন্তু ধীরে ধীরে, যখন দ্বিতীয় পর্ব আসে, বিপক্ষের অধিনায়ক থেকে কোচ, সবাই সময় পেয়ে যায় সেই শক্তি, দুর্বলতার ব্যাপারে খুঁটিয়ে দেখার। আশা করবো, তার পরেও মুস্তাফিজুর নিজের ফর্ম ধরে রাখবে এবং দেশের হয়ে উইকেট তুলে নেবে। ”
টাইগাররা ভারতকে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে ধরাশায়ী করার পর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার সরফরাজ নওয়াজ। তিনি বলে বেড়ান, আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে পাকিস্তানকে বাদ দিতেই ভারত ইচ্ছে করে সিরিজে হেরে যায়, এর ছক কষা হয় নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরেই। আর প্রোটিয়াদের একই ব্যবধানে নাস্তানাবুদ করার পর তেমনই গন্ধ খুঁজে পেয়ে আইসিসির তদন্ত দাবি করেন বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় কটাক্ষকারী রমিজ রাজা।
দুরন্ত ফর্মে থাকা বাংলাদেশ দলের পাশে দাঁড়িয়ে গাভাস্কার যে কলাম আবরণে ‘কথার তীর’ ছুঁড়েছেন, সেটা যে সরফরাজ নওয়াজ ও রমিজ রাজাদের উদ্দেশ্য করেই ছোঁড়া হয়েছে তা বুঝতে নিশ্চয় ক্রিকেটবোদ্ধা হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৫
এইচএ/