ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

১৩২ রানের টার্গেট টাইগারদের

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৫
১৩২ রানের টার্গেট টাইগারদের ছবি : শোয়েব মিথুন /বাংলানিউজটোয়েন্টি.কম

মিরপুর থেকে: তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ফিল্ডিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগারদের দলপতি মাশরাফি।



টাইগার বোলারদের বোলিং তোপে পড়ে নির্ধারিত ২০ ওভারের ৩ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। অলআউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে ১৯.৩ ওভারে করে ১৩১ রান।

টাইগারদের হয়ে বোলিং উদ্বোধন করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই ওপেনার সিকান্দার রাজাকে ফিরিয়ে দেন নড়াইল এক্সপ্রেস। ম্যাশের বলে লিটন দাসের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ৫ রান করা রাজা।

পরের ওভারেই আল আমিনের শিকারে সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার ‍রেগিস চাকাভা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন শূন্যহাতে ফেরা চাকাভা।

ওপেনার সিকান্দার রাজাকে ফিরিয়ে দিয়ে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আবারো আঘাত হানেন মাশরাফি। তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে জিম্বাবুয়ের দলপতি এলটন চিগুম্বুরাকে সরাসরি বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন টাইগার দলপতি। বিদায় নেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে কোনো রানই আসেনি।

ব্যাটিংয়ের কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেন ক্রেইগ আরভিন এবং শন উইলিয়ামস। স্কোরবোর্ডে ২৮ রান যোগ হতে ইনিংসের নবম ওভারে বোল্ড করে শন উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে দেন নাসির হোসেন। ব্যক্তিগত ১৫ রান করে ফেরেন উইলিয়ামস। ইনিংসের ১৫তম ওভারে এসে আরেকবার উইকেটের দেখা পেল টাইগাররা। ক্রেইগ আরভিনকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আউট হওয়ার আগে তিনি ২০ রান করেন। এছাড়া ওয়ালারকে সঙ্গ দিয়ে স্কোরবোর্ডে আরও ৬৭ রান যোগ করেন।

ক্রেইগ আরভিনের বিদায়ের পর নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আসা লুক জঙ্গোকে এলবির ফাঁদে ফেলেন জুবায়ের হোসেন। জিম্বাবুয়ের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন তিনি। একই ওভারে এ স্পিনার ফিরিয়ে দেন মাদজিভাকে।

মাত্র ২০ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক হাঁকানো ১৫তম ম্যাচ খেলতে নামা ম্যালকম ওয়ালার ক্যারিয়ার সেরা ৬৮ রান করে মুস্তাফিজের বলে আউট হন তিনি। মাত্র ৩১ বলে ৪টি চার আর ৬টি ছক্কায় ওয়ালার তার ইনিংসটি সাজান। পরের ওভারে আল আমিনের বলে ফেরেন গ্রায়েম ক্রেমার। বোল্ড হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩ রান। ২০তম ওভারে পানিয়াঙ্গারাকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে (ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি) সিরিজে প্রথমবারের মতো দলে আসেন এনামুল হক বিজয় এবং জুবায়ের হোসেন লিখন। এ দুই টাইগারদের সুযোগ দিতে জায়গা ছেড়েছেন ইমরুল কায়েস এবং আরাফাত সানি।

এ ম্যাচে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান এবং জিম্বাবুয়ের হ্যামিল্টন মাসাকাদজা নেই। নেই অতিথিদের প্রসপার উতসেয়া। সাকিব এবং মাসাকাদজা দু’জনই দুই দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টির মুখোমুখি লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি রান, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের মালিক। ৭টি করে উইকেট নিয়ে সাকিব এবং উতসেয়া সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক। তবে, ব্যক্তিগত ইংনিস সর্বোচ্চতে এবং সেরা বোলিংয়ে দুই জিম্বাবুইয়ানের থেকেও এগিয়ে সাকিব।

টাইগারদের টি-টোয়িন্টর অতীত পরিসংখ্যান কিছুটা বিবর্ণ। এ পর্যন্ত ৪৪টি ম্যাচ খেলে এ ফরমেটে টাইগারদের জয়ের সংখ্যা মাত্র ১২টি। ক্রিকেটের ক্ষুদ্র ফরেমেটে ৩১টি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। এ ফরমেটে ১২ ম্যাচ জয়ী বাংলাদেশের অবস্থানও ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশের ওপরে আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, আর নেদারল্যান্ডস।

আগামী বছর টি-টোয়েন্টির এশিয়া কাপ (ফেব্রুয়ারি-মার্চে, বাংলাদেশের মাটিতে) ও মার্চ-এপ্রিলে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলবে বাংলাদেশ। আর চলতি বছরের ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া বিপিএল টি-টোয়েন্টির উত্তাপ ছড়াতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজটি টাইগারদের জন্য ভালো প্রস্তুতির মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছে।

ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে দাঁড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে বড় দল-ছোট দলের পার্থক্যের হিসেবে জিম্বাবুয়ের কাছ থেকে কিছুটা প্রতিরোধ প্রত্যাশিত। ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচেই প্রতিরোধহীন আত্মসমর্পণ সফরকারীদের। অপরদিকে, ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করায় স্বাগতিকদের প্রত্যাশার পারদ এখন চূড়ায়। তবে, ৫০ ওভারের ক্রিকেটে গর্ব করার মতো বাংলাদেশের অনেক কিছু থাকলেও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ব্যর্থতার পাল্লাটাই ভারী।

টি-টোয়েন্টিতে ২০টি সিরিজে খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র একটি সিরিজে, দুটি সিরিজ ড্র করেছে টাইগাররা। তবে, বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে তিনটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে জিম্বাবুয়ে। তাই টি-টিয়েন্টিতেও জয়ের জন্য মাশরাফি-মুশফিক-নাসিরদের কাছ থেকে সেরাটা প্রত্যাশা থাকবে টাইগার সমর্থকদের।

বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন, জুবায়ের হোসেন লিখন।

জিম্বাবুয়ে দল: সিকান্দার রাজা, রেগিস চাকাভা, এলটন চিগুম্বুরা, ক্রেইগ আরভিন, শন উইলিয়ামস, ম্যালকম ওয়ালার, চিসোরো, তিনাসে পানিয়াঙ্গারা, মাদজিভা, লুক জঙ্গো এবং গ্রায়েম ক্রেমার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ১৩ নভেম্বর ২০১৫
এমআর

** জিম্বাবুয়ের নবম উইকেটের পতন
** রিয়াদ ফেরালেন আরভিনকে
** ওয়ালারের ব্যাটে এগুচ্ছে জিম্বাবুয়ে
** জিম্বাবুয়ের চতুর্থ ব্যাটসম্যান সাজঘরে
** ম্যাশের গোলায় বিপাকে জিম্বাবুয়ে
** প্রথম নয় বলে দুই ওপেনারের বিদায়
**প্রথম ওভারেই ম্যাশের আঘাত
** টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।