ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ইতিহাস গড়া হলো না টাইগারদের

মুশফিক পিয়াল, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৬
ইতিহাস গড়া হলো না টাইগারদের ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে জিততে পারলো না বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টির এক নম্বর দল টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেট হেরে গেলো স্বাগতিকরা।

টাইগারদের করা ১২০ রানের জবাবে দুই উইকেট হারানো ভারত ৭ বল হাতে রেখেই জয় তুলে এশিয়ার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হলো।

এর আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে দারুণ ব্যাটিং করে বাংলাদেশ। ওভার কমিয়ে দেওয়া ম্যাচের ১৫ ওভারে টাইগাররা ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ১২০ রান। শেষ দিকে ব্যাটে ঝড় তুলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে হাইভোল্টেজ এ ম্যাচটি শুরু হয় সাড়ে নয়টায়। ঝড়-বৃষ্টির সব শঙ্কা দূরে ঠেলে অবশেষে এশিয়া কাপের ফাইনালে মাঠে নামে বাংলাদেশ-ভারত। টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন টিম ইন্ডিয়ার দলপতি মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুই দল সর্বোচ্চ ১৫ ওভার করে খেলার সুযোগ পায়।

এশিয়া কাপের ফাইনালে টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ৪৬ ম্যাচ খেলা তামিম ইকবাল ও ১২ ম্যাচ খেলা সৌম্য সরকার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে আশিষ নেহারা ফিরিয়ে দেন সৌম্য সরকারকে। মিডঅফে হারদিক পান্ডের তালুবন্দি হওয়ার আগে সৌম্য করেন ১৪ রান। তার ৯ বলের ইনিংসে ছিল তিনটি বাউন্ডারি।

ওপেনার সৌম্য সরকারের পর বিদায় নেন তামিম ইকবাল। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর বলে এলবির ফাঁদে পড়েন তামিম। ১৭ বলে দুটি চারে তামিম করেন ১৩ রান।

দলীয় ২৭ রানে সৌম্য আর ৩০ রানের মাথায় তামিম ইকবাল ফিরে গেলে উইকেটে থেকে জুটি গড়েন সাকিব ও সাব্বির। এ জুটি থেকে আরও ৩৪ রান আসে। ইনিংসের দশম ওভারে অশ্বিনের বলে বুমরাহর হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। বিদায়ের আগে ১৬ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ২১ রান করেন সাকিব।

দলীয় ৬৪ রানের মাথায় বাংলাদেশ টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খেলতে থাকে। ইনিংসের ১২তম ওভারের তৃতীয় বলে রান আউট হয়ে ফেরেন মুশফিকুর রহিম (৪)। পরের বলেই ফেরেন টাইগারদের দলপতি মাশরাফি। জাদেজার বলে কোহলির তালুবন্দি হন তিনি।

এরপরই ব্যাটে ঝড় তুলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। হারদিক পান্ডের করা ১৪তম ওভারে ১৯ রান তুলে নেন তিনি। মাত্র ১৩ বল মোকাবেলা করে রিয়াদ দুটি করে চার ও ছক্কায় করেন ৩৩ রান। সাব্বির ২৯ বলে করেন ৩২ রান। এ দুই ব্যাটসম্যান মিলে ২০ বলে ৪৫ রান যোগ করে অবিচ্ছন্ন থাকেন।

১২১ রানের টার্গেটে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। প্রথম ওভারে টাইগারদের হয়ে বোলিংয়ে আসেন গতির ঝড় তোলা তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলেই রোহিত শর্মাকে সাজঘরে ফেরান আল আমিন হোসেন। স্লিপে সৌম্যর হাতে ধরা পড়েন ১ রান করা রোহিত।

দলীয় ৫ রানের মাথায় রোহিত শর্মাকে বিদায় করেন আল আমিন হোসেন। এরপর উইকেটে জুটি গড়েন বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ান। অর্ধশতক হাঁকিয়ে ধাওয়ান ইনিংসের ১৩তম ওভারে তাসকিনের বলে বিদায় নেন। সৌম্যর দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরেন ৪৪ বলে ৯টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকানো ধাওয়ান।

কোহলি ২৮ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর ধোনির ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ২০ রান (৬ বলে)।

এ ম্যাচ জিতলে ইতিহাস সৃষ্টি করতো মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। জিততে পারলেই প্রথমবারের মতো বড় কোনো আসরের শিরোপা জিততো টাইগাররা।

এশিয়া কাপ শুরুর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। শেষ দুটি ম্যাচে হেরে বসে টাইগাররা। এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচেও হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে, সব শঙ্কা দূরে ঠেলে নিজেদের পরের ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারায় মাশরাফি বাহিনী। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেয় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।

নিজেদের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টি-টোয়েন্টির অন্যতম সফল দল পাকিস্তানের বিপক্ষে দাপুটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। সঙ্গে ফাইনাল নিশ্চিত করে মাশরাফি-তামিম-সাকিব-মুশফিক-আল আমিনরা।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, আল-আমিন হোসেন, তাসকিন আহমেদ, আবু হায়দার রনি ও নাসির হোসেন।     

ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, সুরেশ রায়না, যুবরাজ সিং, হারদিক পান্ডে, মহেন্দ্র সিং ধোনি, রবীন্দ্র জাদেজা, জাসপ্রিত বুমরাহ, আশিষ নেহরা ও রবীচন্দ্রন অশ্বিন।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, ০৭ মার্চ ২০১৬
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।