ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সেই ‘নায়ক’ই আমন্ত্রণ পেলেন না লাহোরের ফাইনালে!

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৭
সেই ‘নায়ক’ই আমন্ত্রণ পেলেন না লাহোরের ফাইনালে! ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য আজকের দিনটি (৩ মার্চ) বিশেষ কিছু। এই দিনেই জন্ম নিয়েছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেটের কিংবদন্তি ইনজামাম উল হক। আর তার জন্মদিনের ৩৯ বছর পর পাকিস্তান ক্রিকেটে নেমে আসে ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কালো অধ্যায়টি। ২০০৯ সালের এই দিনে সফরকারী শ্রীলঙ্কার টিম বাসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।

লাহোর হামলার দিনে নায়ক বলা চলে লঙ্কানদের বহনকারী টিম বাসের চালক মেহার মোহাম্মদ খলিলকে। তার দুর্দান্ত সাহসিকতায় বেঁচে যান লঙ্কানরা।

শ্রীলঙ্কার টিম বাসে কোনো বন্দুকধারী পুলিশ ছিল না। সন্ত্রাসীরা প্রথমে ড্রাইভারকে গুলি করার চেষ্টা করে। তারপর বাসের দু’পাশ থেকে গুলি চালাতে থাকে। গুলিতে বাসে মোট ৩৯টি ফুটো হয়। কিন্তু ড্রাইভার খলিলের সাহসিকতায় প্রথম বাসটা শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের নিয়ে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পৌঁছায়। আহত হলেও তাতে বেঁচে যান সফরকারীরা।

সে সময় ড্রাইভার খলিল জানান, ছ’জন করে মোট চারটি গাড়ি এবং আরও মোটরসাইকেলের কনভয় টিম বাসের সামনে ছিল। তারা জঙ্গিদের ধরতে কিংবা প্রতিরোধ করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে আমি গাড়ি চালিয়ে যেতে থাকি। তাতে, আহত হলেও আমরা প্রাণে বেঁচে যাই।

সে হামলায় প্রায় ২৫ মিনিট ধরে গোলাগুলি চলে। ছয়জন নিরাপত্তারক্ষী সহ মোট আটজন মারা যান। বাকি দু’জন পথচারী ছিলেন। শ্রীলঙ্কার স্টাফসহ সাত ক্রিকেটার মারাত্মক আহত হন।

সে ঘটনার পর থেকে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক কোনো মেগা টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়নি। মাঝে জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল পাকিস্তান সফর করেছিল। এবার প্রথমবারের মতো দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেট পিএসএলের ফাইনালে সেই লাহোরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

আর এমন একটি মেগা ইভেন্টের ফাইনালে পাকিস্তানের সেই নায়ক খলিলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। খলিল জানান, ‘আমি চাই পাকিস্তানে আবারো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরে আসুক। পিএসএলের ফাইনাল ম্যাচটি মাঠে বসে দেখার ইচ্ছে আছে। কিন্তু, ক্রিকেট বোর্ডের এমন কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করেনি, কিংবা একটি টিকিটও সাধেনি। আমি নিজেই টিকিট কেনার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, সেই টিকিটও পাইনি। অথচ দেশের ক্রিকেট বোর্ড সেই ঘটনার পর আমাকে বীর বলে উল্লেখ করেছিল। তারা আবারো পাকিস্তানে ক্রিকেট ফেরাতে ব্যস্ত। ’

শ্রীলঙ্কান সরকার এবং পাকিস্তানের অনেক কর্তাব্যক্তিরাই খলিলকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিল। তিনি নিজের বাস কোম্পানি বড় করেছেন সেই টাকায়। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাকিস্তানের ওয়ানডে সিরিজের সব ম্যাচেই অতিথি হিসেবে খলিলকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আমন্ত্রণ করেছিল। কিন্তু, এবার লাহোরের ফাইনালে খলিলকে ডাকা হয়নি। তিনি জানান, ‘মাঠে বসেই আমি এই ম্যাচটি দেখতে চেয়েছিলাম। বোর্ড থেকে আমাকে আমন্ত্রণ না জানানোয় চেষ্টা করেছি অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট কেনার। সেটাও পারিনি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ০৩ মার্চ ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।