ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাকিবের ঘূর্ণিতে সাজঘরে রেনশ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭
সাকিবের ঘূর্ণিতে সাজঘরে রেনশ ছবি: উজ্জ্বল ধর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৫৭ রান তুলতেই শেষ হয় স্বাগতিক বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে, সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার সামনে টার্গেট ৮৬ রান। ঢাকা টেস্টে ২০ রানে হেরে যাওয়া অজিদের সিরিজে সমতায় ফেরার সহজ সুযোগ।

এ রিপোর্ট লেখা অবধি অস্ট্রেলিয়া তিন উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৪৮ রান। আর মাত্র ৩৮ রান দরকার সফরকারীদের।

উইকেটে পিটার হ্যান্ডসকম্ব ২ রানে অপরাজিত।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩০৫ (১১৩.২ ওভার)
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৩৭৭ (১১৯.৫ ওভার)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ১৫৭ (৭১.২ ওভার)
অস্ট্রেলিয়ার টার্গেট: ৮৬ রান

৮৬ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নামেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর ম্যাট রেনশ। ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করা ওয়ার্নারকে দলীয় ১৩ রানের মাথায় বিদায় করেন মোস্তাফিজ। সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হওয়ার আগে ওয়ার্নার ১৩ বলে করেন মাত্র ৮ রান। চট্টগ্রাম টেস্টের আগের ইনিংসেও মোস্তাফিজের বলে সাজঘরে ফিরেছিলেন ওয়ার্নার। দ্বিতীয়বার আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। দলপতি স্টিভ স্মিথকে দলীয় ৪৪ রানের মাথায় বিদায় করেন তিনি। উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে তিনি করেন ৯ বলে ১৬ রান। তার ছোটো এই ইনিংসে ছিল তিনটি বাউন্ডারির মার।

এরপর সাকিবের ঘূর্ণিতে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার ম্যাট রেনশ। ৪০ বলে ব্যক্তিগত ২২ রান করে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন রেনশ। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

এর আগে চতুর্থ দিন সকালে (বৃহস্পতিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর) ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারায়। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই বিদায় নেন ওপেনার সৌম্য সরকার। ৯ রান করে অজি পেসার প্যাট কামিন্সের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। ঢাকা টেস্টের পর চট্টগ্রামেও ব্যর্থতার পরিচয় দেন সৌম্য। এদিকে সৌম্যর বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। নাথান লায়নের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন তিনি। ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। নাথান লায়নের বলে শটে থাকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে ফেরেন এ বাঁহাতি। ইমরুলের বিদায়ের ঠিক পরই প্যাভিলিওনমুখী হন সাকিব আল হাসান। মাত্র ২ রান করে নাথান লায়নের তৃতীয় শিকার হন তিনি। স্টিভ ও’কিফের বলে ৫ রানে আউট হন নাসির হোসেন। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি সাব্বির রহমান। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়ে নাথান লায়নের শিকার হন তিনি। ৫৯ বলে ব্যক্তিগত ২৪ করে স্ট্যাম্পিং হন সাব্বির।

মুশফিক আর মুমিনুলের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। টপঅর্ডারের ছয় উইকেট হারিয়ে ব্যাট করছিলেন স্বাগতিক দুই ব্যাটসম্যান। তবে, ইনিংসের ৫৩তম ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডের গ্লাভসবন্দি হন মুশফিক। বিদায়ের আগে ১০৩ বলে ৩১ রান করেন স্বাগতিক দলপতি। মুমিনুলের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে আরও ৩২ রান যোগ করেন মুশফিক। দলীয় ১২৯ রানের মাথায় সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। ইনিংসের ৬০তম ওভারে বিদায় নেন মুমিনুল হক। ৬১ বলে ২৯ রান করে লায়নের বলে প্যাট কামিন্সের তালুবন্দি হন তিনি। দলীয় ১৪৯ রানের মাথায় বাংলাদেশ তাদের অষ্টম উইকেট হারায়।

৩২ বলে মাত্র ৪ রান করে লায়নের ষষ্ঠ শিকারে সাজঘরে ফেরেন বোল্ড হওয়া তাইজুল। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন মোস্তাফিজ। ও’কিফের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মোস্তাফিজ কোনো রান করতে পারেননি। মিরাজ ৫৪ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। নাথান লায়ন ৬টি, ও’কিফ ২টি উইকেট দখল করেন। এটাই লায়নের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। চট্টগ্রাম টেস্টে ১৫৭ রানে ১৩ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার লায়ন। তার আগের সেরা ছিল ২৮৬ রানে ১২ উইকেট।

এর আগে চতুর্থ দিন কোনো রানই যোগ করতে পারেনি অজিরা। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে নাথান লায়নকে তুলে নেন মোস্তাফিজুর রহমান। এরই সঙ্গে বাংলাদেশ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট লাভ করেন তিনি। স্লিপে থাকা ইমরুল কায়েসের ক্যাচে বিদায় নেন লায়ন। ফলে ৭২ রানের লিড পায় অস্ট্রেলিয়া।

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে বাংলাদেশি বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ে ম্যাচে ফেরে টাইগাররা। ৩৭৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে অজিরা দিন শেষ করে। তবে ৭২ রানের লিড নেয় সফরকারীরা। বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩০৫ রান করেছিল।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা পান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ২৩৪ বল মোকাবেলায় ৭টি চারের সাহায্যে ১২৩ করে মোস্তাফিজের বলে আউট হন তিনি। চলতি সিরিজে ওয়ার্নারের এটি ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮২ রান করেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব।

টাইগার বোলারদের মধ্যে দারুণভাবে ফিরে আসেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। টাইগার এই পেসার নেন ৪টি উইকেট। ৩ উইকেট পান স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। একটি করে উইকেট লাভ করেন সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম।

এর আগে স্বাগতিক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমানের হাফসেঞ্চুরিতে ৩শ’ রানের গন্ডি পার হয় বাংলাদেশ। মুশফিক ৬৮ ও সাব্বির ৬৬ রান করেন। নাসির হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান। অজি বোলারদের মধ্যে একাই ৭ উইকেট তুলে নেন স্পিনার নাথান লায়ন। ২টি উইকেট লাভ করেন আরেক স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
এমএমএস/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।