ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মোস্তাফিজের জোড়া আঘাত

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৮
মোস্তাফিজের জোড়া আঘাত ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে চালকের আসনে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে ২২২ রানের জবাবে মাত্র ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে লঙ্কানদের অলআউট করতে মরিয়া স্বাগতিক শিবির।

আট উইকেট হারালেও প্রথম ইনিংসে ১১২ রানের লিডের সুবাদে স্বস্তিতে শ্রীলঙ্কা। এ রিপোর্ট লেখা অবধি তাদের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৫৪ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১৭৩।

লিড ২৮৫। রোশেন সিলভা ৪৩ ও সুরাঙ্গা লাকমল ১ রানে ব্যাট করছেন।

সবশেষ ৫৬তম ওভারে পরপর দুই বলে দিলরুয়ান পেরেরা (৭) ও আকিলা ধনাঞ্জয়াকে (০) লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার আগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের তালুবন্দি হয়ে তাইজুল ইসলামের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন নিরোশান ডিকভেলা (১০)। সিলভা-চান্দিমাল জুটি (৫১) ভেঙে মূল্যবান ব্রেকথ্রু এনে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এলবিডব্লু হয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল (৩০)।

ওপেনার দিমুথ করুণারত্নেকে (৩২) ইমরুল কায়েসের ক্যাচ বানিয়ে এই টেস্টে প্রথম উইকেটের দেখা পান মিরাজ। ৯২ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় সফরকারীরা। তার ৮০ রানের মাথায় দানুশকা গুনাথিলাকাকে (১৭) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন আব্দুর রাজ্জাক। সপ্তম ওভারে ওপেনার কুশল মেন্ডিসকে (৭) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন। রিভিউ নিয়েও কোনো কাজ হয়নি। দলীয় ১৯ রানে মেন্ডিসকে হারানোর পর ধনাঞ্জয়া-করুণরত্বের জুটি (৩৪) থামিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ক্লিন বোল্ড হন ওয়ানডাউনে নামা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (২৮)।

এর আগে লঙ্কান বোলিং তোপে মাত্র ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্ট ক্রিকেটে এটিই সর্বনিম্ন স্কোর। শেষ ৩ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেটের পতন ঘটে। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) চার উইকেটে ৫৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম সেশনও পার করতে পারেনি স্বাগতিক শিবির। ৪৫.৪ ওভারে অলআউট। ৩৮ রানে অপরাজিত থেকে যান মেহেদি হাসান মিরাজ।

শুরুতেই আউট হয়ে দলকে চাপের মধ্যে ফেলে দেন লিটন দাস (২৫)। ২৭তম ওভারে সুরাঙ্গা লাকমলের বল তার ব্যাটে লেগে স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। ৭৩ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপটাও বেড়ে যায়। লিটন-মিরাজ জুটিতে আসে ৩৮।

একই ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১৭) ও সাব্বির রহমানকে (০) ফিরিয়ে জোড়া আঘাত হানেন টেস্ট অভিষিক্ত আকিলা ধনাঞ্জয়া। মিরাজ-মাহমুদউল্লাহর ষষ্ঠ উইকেট জুটি (৩৪) ভাঙার পরই দ্রুত সমাপ্তি টানেন লঙ্কান বোলাররা। মাহমুদউল্লাহ যখন বিদায় নেন দলীয় স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ১০৭। সেটিই হয়ে যায় ১০ উইকেটে ১১০!

অফস্পিনে ধনাঞ্জয়ার তৃতীয় শিকারে পরিণত হন আব্দুর রাজ্জাক (১)। সমান তিন উইকেট দখল করেন লাকমল। শেষ ব্যাটসম্যান মোস্তাফিজুর রহমানকে এলবিডব্লু করে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান আরেক অফস্পিনার দিলরুয়ান পেরেরা।

প্রথম দিনের শেষ বিকেলে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় টাইগাররা। একে একে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল (৪), মুমিনুল হক (০, রানআউট), মুশফিকুর রহিম (১) ও ইমরুল কায়েস (১৯)। ২২ ওভারের খেলা শেষে লিটন ২৪ ও ৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন মিরাজ।

এর আগে আব্দুর রাজ্জাকের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন দেখে দর্শকরা। দীর্ঘ চার বছর টেস্ট দলে ফিরেই নিজের জাত চেনান ৩৫ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। বল হাতে ইনজুরি আক্রান্ত সাকিব আল হাসানের অভাবটা পুষিয়ে দিয়ে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫০০ উইকেটের মালিক। ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে তুলে নেন চারটি উইকেট।

রাজ্জাককে যোগ্য সঙ্গ দেন আরেক বাঁহাতি তাইজুল ইসলাম। মাঠছাড়া করেন চার লঙ্কান ব্যাটসম্যানকে। দু’জনের স্পিন ঘূর্ণিতে প্রথম দিনেই ৬৫.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় লঙ্কানদের ব্যাটিং লাইনআপ। অপর দু’টি উইকেট লাভ করেন মোস্তাফিজুর রহমান। উইকেটশূন্য থাকেন মিরাজ।

সর্বোচ্চ ৬৮ রান আসে ওপেনার কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। ৫৬ রানের কার্যকরী ইনিংসে দলীয় স্কোর দুইশ’ পার করাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন রোশেন সিলভা। শেষদিকে সিলভার পাশে থেকে অবদান রাখেন দিলরুয়ান পেরেরা (৩১) ও টেস্ট অভিষিক্ত আকিলা ধনাঞ্জয়া (২০)। ৬৫.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ দাঁড়ায় ২২২।

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত রান উৎসবের প্রথম টেস্ট ড্রয়ে নিষ্পত্তি হয়। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পর দু’টি টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়াবে। যথাক্রমে ১৫ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ও সিলেটে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।