কিন্তু শনিবারের (১৫ সেপ্টেম্বর) ওই ম্যাচের ৪৭ ওভারে তামিম যা করে দেখালেন তাতে চমকে উঠলো পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। ইনিংসের শুরুতে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েই সরাসরি চলে যান হাসপাতালে।
যেন সম্বিৎ ফিরছিল না! ম্যাচের সে মুহূর্তে একমাত্র মুশফিক ছাড়া আর কেউ যে নেই। দলের রান মাত্র ২২৯। একাদশ ব্যাটসম্যান হিসেবে কেউ নামলে হয়তো মুশফিক ব্যাট চালিয়ে আরও কিছুটা রান বাড়িয়ে নিয়ে লড়াকু একটা ইনিংস এনে দিতে পারবেন বাংলাদেশকে। আর এমন সব ভাবনার মাঝেই ব্যাট হাতে নেমে গেলেন তামিম। এক হাতে খেলার জন্য।
ডানহাত দিয়ে লঙ্কান বোলারকে কোনরকম ঠেকিয়ে স্ট্রাইক দিলেন মুশফিককে। স্ট্রাইক নিয়ে মুশফিকও ব্যাটে কাঁপন ধরালেন। ৩ ওভারে এলো ৩২ রান। তাতে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়াল ২৬১। ফাইটিং স্কোর। যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এই তামিম ইকবাল।
সংবাদ মাধ্যম, ফেসবুক, টুইটারে তামিম বন্দনার ঝড় ওঠে। তার বীররোচিত মানষিকতায় বাঙালি হিসেবে গোটা জাতি হয় গর্বিত। অধিনায়ক ও অন্যান্য ক্রিকেটারদের কন্ঠে ঝরে সুনাম।
দলের প্রয়োজনে, দেশের প্রয়োজনে অনুজের এমন দায়িত্বশীল ও নির্ভীক মানষিকতায় দেশের অন্য আট দশজনের মতো গর্বিত অগ্রজ নাফিস ইকবালও। পাশাপাশি দেশবাসীকে অনুরোধ করলেন তামিমের দুঃসময়ে দেশবাসী যেন এই নিবেদনের কথা ভুলে না যায়।
'আমি বাংলাদেশের সবাইকে অনুরোধ করবো এই জিনিসটা যাতে মনে রাখে। এখন সবাই প্রশংসা করছে হয়তো দুদিন পর মানুষ তাকে নিয়ে অন্যরকম মন্তব্য করতে পারে। ভাই হিসেবে আমি গর্বিত, দেশকে সে গর্বিত করেছে। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবেও আমি গর্বিত। তাকে এই কাজের জন্য যেন সবাই মনে রাখে। ’
টুর্নামেন্টের আগেই অনুজের ইনজুনিতে আবেগপ্রবন নাফিস আরও বলেন, ‘ওর যখন ইনজুরি হয়েছে আমি খুবই আপসেট ছিলাম। শেষ সিরিজে (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) এত ভাল খেলেছে, ভাল যাচ্ছিল…যাই হোক এসব কারণে একটু আপসেট ছিলাম। হাতে একটু ব্যথা নিয়েই দুবাই গেল। তারপর যখন শুরুর ম্যাচেই আঘাত পেল আরও হতাশ হয়ে পড়লাম। কিন্তু তামিম যখন উইকেটে ফিরে আসল একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি খুবই অবাক হই। গ্লাভস পরতে পারছে না, যেভাবে ব্যাটিং করেছে আঘাত লাগতে পারতো। এটা অনেক প্রেরণাদায়ক একটা সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮
এইচএল/ এমকেএম


