ইন্দোর টেস্টের দুই দিন অতিবাহিত হয়েছে। এই দুই দিনের প্রথম দিনের শুরুতে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ বিধ্বস্ত করে ১৫০ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে ভারতীয় পেসার-স্পিনাররা।
সিরিজের প্রথম টেস্টের বাংলাদেশ দলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসসহ ৭ জন ব্যাটসম্যান খেলছেন। বোলার আছেন ৪ জন। ক্যারিয়ারের শুরুতে অলরাউন্ডার হিসেবে ভাবা হলেও মেহেদী হাসান মিরাজ খেই হারিয়ে ফেলেছেন। বোলিং আর ব্যাটিং, দুটিতেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন এই স্পিনার। একাদশের বাইরে স্কোয়াডে আরও ৩ বিশেষজ্ঞ বোলার এবং একজন ওপেনিং ব্যাটসম্যান। ফলে একমাত্র অলরাউন্ডারের ব্যর্থতা দলে চাপ বাড়াচ্ছে।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ডমিঙ্গো বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই যে দল গঠনে পরিবর্তন আনতে হবে। নয়তো ফলাফল একই হবে। আমাকে নির্বাচকদের সঙ্গে বসে পরবর্তী পরিকল্পনা করতে হবে। দলকে এগিয়ে নিতে সক্ষম এমন খেলোয়াড় খুঁজে বের করতে হবে। এতে যদি দলে নতুন মুখ আনতে হয় এবং তাতে সাময়িক অসুবিধাও হয়, তবু আমি মনে করি না এখন যে অবস্থা তার চেয়ে খুব বেশি আলাদা হবে। ’
‘আমাদের দলে কিছু দুর্দান্ত খেলোয়াড় আছে যাদের সমীহ করা দরকার। বাংলাদেশের জন্য তাদের পারফরম্যান্সকে মূল্যায়ন করা উচিত। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে দলের স্বার্থই আগে’, যোগ করেন তিনি।
অবশ্যই বর্তমান দলের সবচেয়ে বড় ঘাটতি সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দলে থাকলে পাঁচ বোলার খেলানো যায়। সঙ্গে পাওয়া যায় একজন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানও। সাকিব থাকলে সেই পঞ্চম বোলার খেলানোর বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায় যিনি ৮ নম্বরে ব্যাটিং করতে পারেন। আর এখানেই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের কথা চলে আসে। ডমিঙ্গো নিজেও সাইফউদ্দিনের মতো পেস অলরাউন্ডার চান। কারণ, ইনজুরির কারণে এখনও নিয়মিত হতে পারছেন না ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির নিয়মিত এই মুখ।
ডমিঙ্গো বলেন, ‘দুই সিমার নিয়ে খেলা কঠিন। আমাদের অবশ্যই একজন সিমার লাগবে যে ব্যাটও করতে পারে। সাইফউদ্দিন আছে, কিন্তু সে ইনজুরিতে ভুগছে। কিন্তু দল গঠনে এমন একজনকে দরকার। আমি মনে করি, বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা অধিকাংশ দলই ভালো উইকেটের জন্য প্রস্তুতি নেয়, যেখানে স্পিন কাজ করে না। এজন্যই এমন একজন সিমার চাই যে ৭ কিংবা ৮ নম্বরে ব্যাট করতে পারে। ’
আরও একটা কারণে বাড়তি ব্যাটসম্যান চান ডমিঙ্গো, কারণ প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের অনেকেরই টেস্ট গড় ভালো না। এজন্যই একজন বোলারকে কোরবানি দিতে হয়। তিনি বলেন, ‘দলের ৬ ব্যাটসম্যানের গড় যদি ৪৫ কিংবা ৫০ হয় তাহলে ব্যাপারটা সহজ। ভারতের ব্যাটসম্যানের দেখুন, কিন্তু আফসোস আমাদের ব্যাটিং লাইনআপে অমন সংখ্যা নেই। আমরা একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলিয়ে অভাব পূরণ করার চেষ্টা করি। কিন্ত উইকেট তুলতে না পারলে, সবাই বলবে তোমরা বাড়তি বোলার খেলাচ্ছো না কেন?’
দলের খেলোয়াড়দের টেস্ট ক্রিকেট খেলার মানসিকতা নিয়েও চিন্তায় আছেন ডোমিঙ্গো। কারণ দলের অনেকেই টেস্টের চেয়ে টি-টোয়েন্টিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। তার ভাষায়, ‘কোচ হিসেবে এমন পরিস্থিতি বেশ কঠিন। অবশ্যই এটা কঠিন, আমার মাত্রই দ্বিতীয় টেস্ট এটা এবং আমাকে দেখতে হচ্ছে খেলোয়াড়রা কীভাবে টেস্টকে গ্রহণ করছে, কীভাবে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। ফলে এখনই এটা বলা সম্ভব নয়, কাকে কোন ফরম্যাটে খেলানো ঠিক হবে। দলে অনেকেই আছে যারা টি-টোয়েন্টির জন্য পারফেক্ট আর কেউ কেউ আছে যারা টেস্টের জন্য ঠিক আছে। তাদের আলাদা করার চিন্তা শুরু করতে হবে। দুই টি-টোয়েন্টি আর প্রথম টেস্ট শেষে আমি কিছুটা বুঝতে শুরু করেছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এমএইচএম