১০ বছর আগে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর বিশ্ব ক্রিকেটে একপ্রকার ব্রাত্য হয়ে পড়েছিল পাকিস্তান। এরপর থেকে কোনো দল পাকিস্তানের মাটিতে সফর করতে রাজি হয়নি বহু বছর।
বৃহস্পতিবার (০৬ আগস্ট) পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের ওরাকজাই জেলার দ্রাদার মামাজাই এলাকায় এক স্থানীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট (আমন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট) ফাইনাল চলাকালীন একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এলোপাথাড়ি গুলি করেছে। ছানায় গ্রাউন্ড নামে ওই মাঠে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কারো হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। দেশটির পত্রিকা দ্য নিউজের প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
তবে আচমকা এই সন্ত্রাসী হামলায় সবাই দিশেহারা হয়ে পড়েন। কারণ ফাইনাল ম্যাচটি দেখতে ওই সময় রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শকরাও। দ্য নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যাচ শুরুর আগেই সন্ত্রাসীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। দর্শক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতারা কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচালেও হতবিহবল হয়ে পড়েন সবাই।
দ্য নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ম্যাচটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামের নেতা হাজি কাশিম গুল। খেলা শুরুর পরেই মাঠের কাছে এক পাহাড়ের উপর থেকে গুলি ছুড়তে শুরু করে সন্ত্রাসীরা। সঙ্গে সঙ্গে মাঠে হুলুস্থুল পড়ে যায়। সবাই পড়িমরি করে দিগবিদিক ছুটতে শুরু করেন। ম্যাচও সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করা হয়। কেউ আহত না হলেও এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এর আগে ২০০৯ সালে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে যাওয়ার পথে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর হামলা হয়েছিল। সেই ঘটনায় বেশ কয়েকজন প্রাণ হারালেও বরাতজোরে বেঁচে যান লঙ্কান ক্রিকেটাররা। তবে কয়েকজন লঙ্কান ক্রিকেটার গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এই ঘটনার জেরে ১০ বছর পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। বহুদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতকে নিজেদের ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
২০১৯ সালে অবশ্য সেই শ্রীলঙ্কাই প্রথম সফরে যেতে রাজি হয়। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে দলও সেখানে সফর করেছে। অনুষ্ঠিত হয়েছে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিসিএল) ম্যাচও। কিন্তু এবারের হামলার কারণে পরিস্থিতি হয়তো আবারও বদলে যেতে পারে। যদিও এবারের ম্যাচটি স্থানীয় ক্রিকেটের। আর পাকিস্তান দলও এখন ইংল্যান্ড সফরে আছে। তবুও ঘটনাটি বেশ আলোড়ন তুলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২০
এমএইচএম