ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পানিতে লবণাক্ততা: কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৮ মাস ২ টারবাইন চালুর প্রস্তাব ওয়াসার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
পানিতে লবণাক্ততা: কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৮ মাস ২ টারবাইন চালুর প্রস্তাব ওয়াসার

চট্টগ্রাম: কর্ণফুলি ও হালদা নদীর লবণাক্ততা কমাতে বছরের ৮ মাস কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি টারবাইন চালুর প্রস্তাব করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এ নিয়ে সচিবালয়ে পাঠানো হচ্ছে একটি প্রস্তাব।

প্রস্তাবটির বাস্তবায়ন হলে ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততা অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।  

ওয়াসার দাবি, কর্ণফুলী নদীর পানি প্রবাহ কাপ্তাই ড্যাম দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে এ নদীতে পানি নির্গমন কম হয়।

এতে কর্ণফুলী এবং হালদায় জোয়ারের সময় লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়। ফলে মোহরা ও শেখ রাসেল পানিশোধনাগারে পানি উৎপাদন কমিয়ে আনা হয়। যার কারণে মহানগরে পানি সরবরাহে প্রভাব পড়ে। বিগত বছরগুলোতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই ড্যাম নিয়ন্ত্রণ করে পানি ছাড়ার ফলে হালদা নদীতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির পরিমাণ তুলনামূলক কম ছিল।  

জানা গেছে, হালদা নদীতে লবণাক্ততা প্রবেশের ঝুঁকি হ্রাসে গত ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কমপক্ষে ২টি টারবাইন প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত সার্বক্ষণিক চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যা  বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু চলতি বছর ২টি টারবাইন চালু না রাখতে পারায় মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ অধিক হারে বৃদ্ধি পায়। এতে দিনে দুইবার জোয়ারের সময় প্রায় সর্বোচ্চ ১৬ ঘন্টা পানি শোধনাগারের উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়। ফলে দুইটি পানি শোধনাগারের উৎপাদন ৯-১০ কোটি লিটার কমে যায়।  

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বাংলানিউজকে জানান, লবণাক্ততা পরিহার করতে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুইটি টারবাইন চালানোর কোনো বিকল্প নাই। বর্ষামৌসুম শেষে পানির মোট পরিমাণ নির্ণয় করে পরবর্তী বর্ষামৌসুম শুরু পর্যন্ত দুইটি টারবাইন চালানো যায় মত করে সারাবছরের পরিকল্পনা গ্রহণ করলে শুষ্ক মৌসুমে লবণাক্ততা পরিহার করা সম্ভব হবে। বিষয়টি উল্লেখ করে চট্টগ্রাম ওয়াসার পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা সচিবালয়ে পাঠানো হচ্ছে।  

তিনি আরও জানান, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মোট পাঁচটি ইউনিট চালু আছে। যার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট। কাপ্তাই হ্রদে পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ৩৬ মিটার এবং গড় গভীরতা ৯ মিটার। সাধারণভাবে হ্রদে সর্বোচ্চ ১০৯ ফুট মীন সী লেভেল পানি ধারণ করা হয়। প্রতিটি টারবাইন পূর্ণক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ১৪০ ঘনমিটার/সেকেন্ড পানি প্রবাহ প্রয়োজন হয়। সরকার কর্তৃক অনুমোদিত রুল কার্ড অনুযায়ী জুন মাসের শুরুতে পানির উচ্চতা ৭৬ ফুট মীন সী লেভেল এবং নভেম্বর মাসে উচ্চতা ১০৯ ফুট মীন সী লেভেল থাকতে হবে। কাপ্তাই লেকের সর্বোচ্চ লেভেলে পানির ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ ৩০ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। সারাবছর আনুপাতিক হারে পানি সরবরাহ করলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক থাকবে অন্যদিকে পানিতে লবণাক্ততাও কমবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
এমআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।