ঢাকা, রবিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০১ সফর ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভালো মেয়েরা রাজনীতি করে না, এই ধারণা এখন বদলাচ্ছে: ডা. শাহাদাত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১১, জুলাই ২৬, ২০২৫
ভালো মেয়েরা রাজনীতি করে না, এই ধারণা এখন বদলাচ্ছে: ডা. শাহাদাত অনুষ্ঠানে অতিথিরা।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নারী ও তরুণদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভূমিকা প্রসঙ্গে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নারীর অধিকার রক্ষায় সকল রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য প্রয়োজন। গত ১৬ বছরে বিএনপির ভেতরে অনেক নারী রাজনৈতিক পরিচিতি গড়ে তুলেছেন।

আমরা চাই তাদের পূর্ণাঙ্গ নেতৃত্বে রূপান্তরের সুযোগ দিতে। ভালো মেয়েরা রাজনীতি করে না; এই ধারণা এখন বদলাচ্ছে, যা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক।

শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে নারী এবং তরুণদের ভবিষ্যৎ শীর্ষক এক সংলাপে এসব কথা বলেন।  

রাজনীতিতে নারী ও যুবাদের ক্ষমতায়ন শীর্ষক চলমান প্রকল্পের অংশে বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সহায়তায় আয়োজিত এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণ নাগরিকদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে তারা জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মুক্ত সংলাপে অংশ নিতে পারে এবং যার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক শাসন, স্বচ্ছতা ও প্রজন্মগত বোঝাপড়া উৎসাহিত হয়।

আগামী নির্বাচনে আগের চেয়ে আরও বেশি নারী প্রার্থী দেখা যাবে জানিয়ে ডা.শাহাদাত হোসেন বলেন, বিএনপির তরুণ, প্রান্তিক কর্মীদের জন্য গঠিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও দলীয়ভাবে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি।

সংলাপে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেন,দেশের প্রায় সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে নারীরা সক্রিয় ছিলেন, কিন্তু মূলধারার রাজনীতিতে তাদের প্রকৃত অন্তর্ভুক্তি ঘটেনি। এটা অবশ্যই বদলাতে হবে। জামায়াত ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৩০টির বেশি আসনে তরুণ প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নারীনেত্রী সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন। গণতন্ত্র আগে না নারী-অংশগ্রহণ আগে, এই বিভাজনের দরকার নেই। দুইটি বিষয় সমান্তরালভাবে এগোতে হবে।

সংলাপে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং তা বাড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা, সর্বস্তরের মানুষের মনস্তাত্তিক পরিবর্তন ও ঐক্য প্রয়োজন—এমন মত ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। গত জুলাইয়ে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে নারীরা সক্রিয় থাকলেও ৫ আগস্টের পর কেন তারা দৃশ্যমান নয়, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী ও তরুণদের ভূমিকা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি রোধ এবং জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে তরুণদের অংশগ্রহণ জোরদার করা সময়ের দাবি।


সিজিএস-এর সভাপতি জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংলাপে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুবাইরুল হাসান আরিফ, জাতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অশোক সাহা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান এবং গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি । বিভিন্ন শ্রেণী এবং পেশার লোকজনসহ বিশবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহ প্রায় ২০০ জন এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।  তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন তাদের কাছে। সংরক্ষিত আসন কি সত্যিই নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ঘাটতি পূরণ করতে পারবে? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ আই) প্রযুক্তির ঝুঁকি মোকাবেলায় নির্দিষ্ট কী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে? জুলাই আন্দোলনে নারীরা নিজেরা এসে দাঁড়িয়েছিল, এখন তাদের ডেকে নিয়ে আসতে হয় কেন? আমরা শুধু ভোট দেব, না কি ক্ষমতায়ও অংশ নেব? ৫ আগস্টের পর কেন নারীদের প্রতি সহিংসতা কেন বেড়েছে, এর প্রতিকারে করণীয় কী? একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রক্রিয়া নারী ও তরুণদের প্রকৃত অবদান কতটুকু ইত্যাদি প্রশ্নের জবাব দেন তারা।  

এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।