ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নির্বাচন সামনে রেখে ত্যাগীদের নেতৃত্বেই হচ্ছে নগর যুবদলের কমিটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৫৩, আগস্ট ২৬, ২০২৫
নির্বাচন সামনে রেখে ত্যাগীদের নেতৃত্বেই হচ্ছে নগর যুবদলের কমিটি

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি শিগগিরই ঘোষণা করা হতে পারে। কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি বিদেশ সফরে থাকায় এতদিন কমিটি আটকে ছিল।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে আন্দোলন–সংগ্রামকেন্দ্রিক কমিটি ঘোষণার পরিকল্পনা থাকলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় এবার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। এতে নগরের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীদের পছন্দের নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হতে পারে।

দলের দুঃসময়ে মাঠে থাকা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলা ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের এবার নেতৃত্বে আনার কথা ভাবছে হাইকমান্ড। এ কারণে কমিটি নিয়ে তোড়জোড় শুরু হওয়ায় পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপও বাড়ছে। স্থানীয় সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও নিজেদের ত্যাগ ও পরিকল্পনা তুলে ধরছেন তারা।

কেন্দ্রীয় যুবদলের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আপাতত আংশিক কমিটি ঘোষণা করে পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হতে পারে। আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে থাকা ত্যাগী, পরীক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের নেতাদের নেতৃত্বে আনার জন্য যাচাই–বাছাই চলছে।

যুবদলের কেন্দ্রীয় ও নগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদকে সভাপতি করে নতুন কমিটি ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তিনি বাদ পড়লে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, নগর যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন, নগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈনউদ্দীন মোহাম্মদ শহীদ, নগর যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি ফজলুল হক সুমন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আকবর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহিদ।

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় দশ মাস ধরে কমিটি বিলুপ্ত রয়েছে। সংগঠনের কাজ এগিয়ে নিতে নতুন কমিটি জরুরি। তারেক রহমান অবগত আছেন, তার নির্দেশনা অনুযায়ী শিগগিরই কমিটি ঘোষণা হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি দলের দুঃসময়ে এবং আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে ছিলাম। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দলের প্রয়োজনে আন্দোলন করেছি। যারা আন্দোলন–সংগ্রামে অংশ নিয়েছে, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করে কমিটি গঠন করা উচিত। দলের প্রয়োজনে যারা ত্যাগ ও পরিশ্রম করেছে, তারাই মূল্যায়নের যোগ্য। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর থেকে যারা আন্দোলনে সক্রিয় হয়েছে, তাদের গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈনউদ্দীন মোহাম্মদ শহীদ বাংলানিউজকে বলেন, দলের জন্য যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং দলের ইমেজ কিংবা সুনাম ক্ষুণ্ন হয়—এমন কাজ যারা করেননি, তাদের মূল্যায়ন করে নগর যুবদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। আমি দলের দুঃসময়ে, আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে ছিলাম। দল যদি আমাকে মূল্যায়ন করে, তাহলে আমি নিজেকে উজাড় করে দিয়ে দলকে শক্তিশালী করতে কাজ করবো। আর যারা দুঃসময়ে মাঠে ছিল, তাদের নিয়েই কাজ করতে চাই।

এব্যাপারে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, কমিটি নিয়ে সুপার ফাইভের মতামত নেওয়া হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে শিগগিরই চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করবেন।

কেন্দ্রীয় যুবদলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় সভাপতি বিদেশে থাকায় এতদিন কমিটি হয়নি। তিনি দেশে ফিরছেন, ফলে অচিরেই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।

কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এবার ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজের নেতাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে। কোনো বিতর্কিত নেতার ঠাঁই হবে না।

উল্লেখ্য, মোশাররফ হোসেন দীপ্তিকে সভাপতি ও মো. শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১৮ সালের ১ জুন পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। চার মাস পর ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।