ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রবৃদ্ধিতে ১৫ দেশকে পেছনে ফেললো বাংলাদেশ! 

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৮
প্রবৃদ্ধিতে ১৫ দেশকে পেছনে ফেললো বাংলাদেশ! 

ঢাকা: নতুন মাইল ফলক স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সাফল্যে বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। চলতি অর্থবছরে (২০১৭-১৮) ১০ মাসে  জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।তবে বছর শেষে আরও বাড়বে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধি ছিলো ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।

ফলে অগ্রগতিতে বিগত নয় বছরে ১৫টি দেশকে সামষ্টিক অর্থনীতিতে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। দেশগুলো হলো ফিনল্যান্ড, চেক রিপাবলিক, রোমানিয়া, নিউজিল্যান্ড, কাতার, ভিয়েতনাম, পর্তুগাল, গ্রিস ও পেরুসহ আরো কয়েকটি দেশ।

বিগত নয় বছরে ৫৮তম স্থান থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে এখন ৪৩তম স্থানে উন্নীত বাংলাদেশ। ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর একটি করে দেশকে বাংলাদেশ পেছনে ফেলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে সরকার।
 
চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় আগের বছরের চেয়ে ১৪২ ডলার বেড়ে ১ হাজার ৭৫২ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৪৬৫ ডলার। এ হিসাবে এক বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় ১৪৫ ডলার।
 
বর্তমানে জিডিপির আকার ২৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গতবছরে ছিলো ২৪৯ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। ফলে এক বছরে জিডিপির আকার বেড়েছে ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
 
মঙ্গলবার (০৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জিডিপি, প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ের হিসাবে এসব তথ্য জানা গেছে।
 
চূড়ান্ত হিসাবে অর্থবছরে (২০১৭-১৮) জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অর্থাৎ প্রাক্কলিত প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি। পরপর দুই বছর ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনের নজিরও সাম্প্রতিক বিশ্বে বিরল। বাংলাদেশ ছাড়া কেবল কম্বোডিয়া আর ইথিওপিয়ার এই অর্জন রয়েছে।

বিবিএস সূত্র জানায়, হাজারও ছোট ছোট উপখাতকে মোট ১৫টি খাতে ভাগ করে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বের করা হয়। ১৫টি খাতকে আবার মোটা দাগে কৃষি, শিল্প ও সেবা তিনটি খাতে ভাগ করা হয়।
 
কৃষি
কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ০৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এখাতের প্রবৃদ্ধি ছিলো ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। কৃষির উপখাত শস্য, প্রাণী ও বনে ভালো প্রবৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ।
 
শিল্প
চলতি অর্থবছরে শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ হয়েছে। গত অর্থবছরে ছিলো ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। শিল্পের উপখাত উৎপাদনে বেড়েছে প্রবৃদ্ধি। চলতি অর্থবছরে উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। গতবছরে এখাতে প্রবৃদ্ধির হার ছিলো ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
 
সেবাখাত
তবে সেবাখাতে এ বছর প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত বছর এখাতে প্রবৃদ্ধির হার ছিলো ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। সেবাখাতের উপখাত পরিবহন, মজুদ ও যোগাযোগ খাতে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত বছর এখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। শিক্ষাখাতে প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ, গত বছর এখাতে প্রবৃদ্ধি ছিলো ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
 
 
বিষয়টি নিয়ে একান্ত আলাপকালে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ অর্থনীতিতে আরও একটি নতুন মাইল ফলকে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এখন জিডিপি’র আকার ২৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থনীতির আকারে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪৩তম। গত নয় বছরে আমরা ১৫টি দেশকে পেছনে ফেলেছি। ২০৪১ পর্যন্ত প্রতিবছর একটি করে দেশকে পেছনে ফেলবো বলে আশা করছি। এভাবে দেশ এগিয়ে গেলে ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবো আমরা। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৮
এমআইএস/ জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।