ব্যবসায়ীরা জানান, পদ্মা ও মেঘনায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ শিকার বন্ধ থাকে। এ সময়ে ইলিশের আমদানি অনেকটা কমে যায়।
আর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সারাদেশে ইলিশের চাহিদা বাড়তে থাকায় দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
বরিশালের পোর্টরোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী মাসুম বেপারি জানান, বর্তমান বাজারে এক কেজি ২০০ গ্রাম বা তার বেশি ওজনের প্রতি মণ ইলিশ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ১০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশের মণ বিক্রি হচ্ছে এক লাখ টাকার উপরে। আর ৬০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকায়। এছাড়াও ছোট আকারের ভেলকা ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়।
নিষেধাজ্ঞার আগে প্রতি মণ এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০ হাজার টাকায়, ৬০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৩৮ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। এর চেয়ে একটু ছোট আকারের ভেলকা ইলিশের প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায়। ঝাটকার প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার টাকা দরে।
মাছের আমদানি এমন ঢিমেতালে থাকলে আগামী সপ্তাহে এর দাম আরও বাড়তে পারে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মৎস্য আড়তদার জামাল হোসেন।
তিনি বলেন, প্রতি বছর এ সময় ইলিশের আমদানির চেয়ে চাহিদা বেশি থাকে, তাই দাম চড়া হয়। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষে ইলিশের আমদানি বাড়বে তখন দামও কমে যাবে।
বরিশালের পোর্টরোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নিয়মিত ক্রেতা আরিফুর রহমান জানান, আমদানি কম তারপরও ইলিশের দাম যা হওয়া উচিত তার চেয়ে অনেক বেশি। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিষেধাজ্ঞা শব্দটিকে পুঁজি করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাছের দাম বাড়িয়েছে কয়েক গুণ। যা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
অপরদিকে বরিশাল মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল বাংলানিউজকে জানান, সরকারের কঠোর নজরদারির কারণে কমছে জাটকা শিকারের পরিমাণ। এবছর নিষেধাজ্ঞার প্রথমদিকে জাটকা শিকারের খবর শোনা গেলেও বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিয়ত অভিযানের কারণে এখন তারও খবর নেই।
আবার কোনো অবতরণ কেন্দ্রেই ব্যবসায়ীরা জাটকা আমদানি বা বিক্রি করতে চায় না। তারা নিষেধাজ্ঞার সময়ে অলস সময় কাটায়, নয়তো অন্য ব্যবসায় পুঁজি খাটান। যেমন বরিশালের মৎস্য ব্যবসায়ীরা বিগত কয়েকবছর ধরে উৎপাদন ভালো হওয়ায় তরমুজের ব্যবসা করেছেন-যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, জাটকা যতো কম শিকার হবে ততো বেশি বড় ইলিশের দেখা মিলবে বাজারে। আর আমদানি বাড়লে দামও কমে যাবে। তবে বর্তমানে স্থানীয়ভাবে ইলিশের আমদানি কম হচ্ছে এবং মিয়ানমারের ইলিশেরও কোনো প্রভাব নেই বাজারে। এতে ইলিশের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/জেডএস