ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রথম বর্ষেই শিক্ষার্থীদের ‘মানসিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ’ দেবে ঢাবি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪
প্রথম বর্ষেই শিক্ষার্থীদের ‘মানসিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ’ দেবে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ভর্তির শুরুতেই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য তিন দিনব্যাপী ‘মানসিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ’ চালু করা হয়েছে। এ বছরের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হবে।

 

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ছাত্রশিক্ষক কেন্দ্রে বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওয়েলনেস ফেস্টিভ্যালে তিনি এ কথা বলেন।  


উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের এ বয়সে আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয় না। গ্রাম থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধনহীন হয়ে পড়ে। এখানে তারা নানাভাবে প্রভাবিত হয়। আমরা বলি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল আছে, ফুলের কাঁটাও আছে। অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেয়।  

তিনি বলেন, কেউ কেউ আছে, আত্মহত্যার পথে হয়তো যায় না। কিন্তু তাদের পরীক্ষার ফল খারাপ হয়, বছর গ্যাপ হয়, বারবার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য যদি ভালো থাকে, তাহলে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা থেকে সহজে উত্তরণ করতে পারবে।  

উপাচার্য আরও বলেন, আমরা ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শ দপ্তরের পরিচালক ও সাইকোলজিস্ট ড. মেহ্জাবীন হক, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, সাইকোলজি, এডুকেশন সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যানকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য একটি ‘ব্রুশিয়ার’ তৈরি করেছি। এটি দেখে দেওয়ার জন্য উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর পাঠিয়েছি। তিনি দেখে মতামত দিয়েছেন। এটিকে আরও উন্নত করার জন্য আমরা বিভাগের কাছে পাঠাব।  

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো প্রথম বর্ষে যে শিক্ষার্থীরা আসবে, তিন দিনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের এই স্বাস্থ্যসেবাটি দেওয়া। তারা যেন মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন থাকে। প্রথম থেকেই তাদের মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এ বছর জুলাই থেকে যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে, তাদেরকে তিন দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া বিভাগগুলোর প্রত্যেক বর্ষের সিআর, শিক্ষার্থী উপদেষ্টাদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেব।  

তিনি আরও বলেন, কোনো কোনো শিক্ষার্থী আছে, যারা বলতে পারে না। কিন্তু তাকে দেখে বোঝা যায় মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কোনো শিক্ষার্থী যাতে অনাদরে-অবহেলায় বিপথগামী না হয়, সে উদ্দেশ্যে আমরা প্রশিক্ষণ দেব।

উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দেয়। তা থেকে আমরা মাত্র ছয় হাজারের মতো ভর্তি করি। অর্থাৎ প্রতি ৫০ বা ৫১ জনের মধ্যে একজন ভর্তির সুযোগ পায়। কী ধরনের প্রক্রিয়ায় এখানে শিক্ষার্থীরা আসে, তা সহজেই অনুমেয়। এই শিক্ষার্থীরা যদি পরিপূর্ণ বিকশিত হতে না পারে, তাহলে এর দায় বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্র, প্রাক্তনসহ আমরা-আপনারা কেউ এড়াতে পারব না।  

তিনি বলেন, আমরা হল, বিভাগ, কেন্দ্রীয় অ্যালামনাইসহ সকলের সহযোগিতায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বৃত্তির আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করব। যেন প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীরা ঝরে না পড়ে। পরে সক্ষমতা থাকলে দ্বিতীয় বর্ষকেও বৃত্তির আওতায় আনব।  

আর্থিক সচ্ছলতা থাকলে বিপথগামী হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যাবে বলেও উল্লেখ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।