ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বহুমতের সহাবস্থানেই প্রগতির পথ

জাহাঙ্গীরনগর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০১৪
বহুমতের সহাবস্থানেই প্রগতির পথ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): বহুমতের সহাবস্থান ও সৃজনশীল তর্কবিতর্কের মধ্য দিয়েই প্রগতির পথ রচিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নব নিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম।

তিনি বলেন, সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতিকে আমি অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করি।



বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, শিক্ষা মানুষের দক্ষতা অর্জন ও মানবিক গুণাবলী বিকাশের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। সেই শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় কোনো পর্যায়ে ব্যত্যয় ঘটলে তা জাতির জন্য মর্মবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, আমরা যদি শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষাদানে ব্যর্থ হই, তবে তার দায় আমাদেরই বহন করতে হবে।

সুস্থ ক্যাম্পাস পরিস্থিতির ওপর জোর দিয়ে উপাচার্য ফারজানা ইসলাম বলেন, আমরা সর্বাবস্থায় মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও জ্ঞান অন্বেষণের সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে সচেষ্ট থাকবো। আমরা সবাই অবহিত আছি যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে বর্তমানে দেশের সরকার পরিচালিত হচ্ছে। এ সরকার প্রগতিপন্থি ও জনকল্যাণকামী।

তিনি বলেন, সরকারের আদর্শ হচ্ছে, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত আলোকিত সমাজ গঠন করা। এই আদর্শ ও চেতনাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, মেধা, দক্ষতা ও কর্মগুণ অনুযায়ী, যার যা প্রাপ্য আমরা তা নিশ্চিত করবো।

শিক্ষকদের রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্য তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, শিক্ষকদের সবার মতাদর্শিক-রাজনৈতিক অবস্থান এক নয়। এটাই স্বাভাবিক। বহুমতের সহাবস্থান ও সৃজনশীল তর্কবিতর্কের মধ্য দিয়েই প্রগতির পথ রচিত হয়।

তিনি বলেন, সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতিকে আমি অত্যন্ত মূল্যবান মনে করি। আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি. দলীয় পরিচয় ও মতপার্থক্য কখনো আমাদের পথ চলায় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে না। আইন, প্রথা, রীতিনীতি ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান রেখে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় নতুন গতি সঞ্চার করতে পারি।

উপাচার্য বলেন, বর্তমান সরকার এ দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত করার যে মহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, আমরা তার বাইরে নই। এই লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা আমাদের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, আমাদের সম্পদ ও বরাদ্দের অপ্রতুলতা রয়েছে। আপনারা অবহিত আছেন প্রতিবছর ঘাটতি বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়। উচ্চশিক্ষা খাতে সরকারের বরাদ্দ বৃদ্ধি আমাদের সবারই কাম্য। শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ব্যতিরেকে জাতির সামগ্রিক অগ্রগতির প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার নয়।

বিগত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্ট সেশনজট প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই সেশনজট দ্রুত নিরসনে কাজ করতে হবে। বিভাগগুলো এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক রয়েছে বলেই আমি বিশ্বাস করি। আমার পক্ষ থেকে আমি এটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে চাই।

তিনি বলেন, আবাসিক হলে সহাবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমি হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করি।

জাকসু নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার বিষয়ে আমি আশাবাদী। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু), হল সংসদ ও বিভাগীয় সংসদের নির্বাচনের বিষয়ে সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। আশা করি, এ বিষয়ে আপনারা আমাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নবনিযুক্ত উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবুল খায়ের, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, বিভাগীয় সভাপতিসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।