এ উপলক্ষ্যে নিজ বাসায় শনিবার (১৭ নভেম্বর) রাতে স্বামী অভিনেতা আলমগীর ও আঁখি আলমগীরকে পাশে নিয়ে ৬৫তম জন্মদিনের কেক কেটেছেন রুনা লায়লা। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন- সুবর্ণা মুস্তাফা, অরুণা বিশ্বাস, চম্পা, শাবনূর, মিশা সওদাগর, ফারুক, আবিদা সুলতানা, রিয়াজ, ফেরদৌস, আমিন খান, তপন চৌধুরী, অমিত হাসান, জায়েদ খান, পপি, পূর্ণিমা, নাশিদ কামাল, মনির খান, দিনাত জাহান মুন্নী, শওকত আলি ইমন, কবির বকুল ও বদরুল আনাম সৌদ।
রুনা লায়লার শুরুটা হয়েছিলো নাচ দিয়ে। পাকিস্তানের করাচিতে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টসে চার বছর নাচ শেখেন তিনি। তবে নাচ ভুলে অজান্তেই গানের ভুবনে ঢুকে পড়েন রুনা। বড় বোন দিনা লায়লা গান শিখতেন। বাসায় তাকে গান শেখাতে আসতেন একজন ওস্তাদ। বোন যখন গান করতেন, তার আশপাশেই থাকতেন রুনা। ওস্তাদজি বোনকে যা শেখাতেন, তা তিনি শুনে শুনেই শিখে নিতেন। পরে গুনগুন করে গাইতেন। মেয়ের প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন বাবা-মা। পরে মেয়েকে গান শেখানো শুরু করেন তারা।
এরপর একদিন হঠাৎ করেই সুযোগ আসে মঞ্চে গাইবার। করাচিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা ওল্ড বয়েজ অ্যাসোসিয়েশন। এখানে গান করার কথা ছিলো রুনার বড় বোন দিনা লায়লার। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন দিনা। শেষে বড় বোনের জায়গায় তার গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেদিন ধুমধাম গেয়ে মাত করেছিলেন। সবাই মুগ্ধও হয়েছিলেন।
রুনা লায়লা প্রথম বাংলা গান রেকর্ডিং করেন পাকিস্তান রেডিওর ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসে। পরে ষাটের দশকে বাংলা ছবিতে গান করার জন্য আমন্ত্রণ পান রুনা। চিত্রপরিচালক নজরুল ইসলাম আর সংগীত পরিচালক সুবল দাস ‘স্বরলিপি’ ছবির গান রেকর্ডিং করতে যান লাহোরে। তারা ছবির একটি গান রুনাকে দিয়ে গাওয়ানোর পরিকল্পনা করেন। তখন তিনি দারুণ ব্যস্ত। তবে শুনে রাজি হয়ে যান। লাহোরের বারী স্টুডিওতে রেকর্ডিং করা হয় গানটি। গানটির শিরোনাম ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’। একই গানে আরও কণ্ঠ দিয়েছিলেন মাহমুদুন নবী। তারপর একজন রুনা লায়লার শুধুই কিংবদন্তি হয়ে ওঠার গল্প।
সুরকার নিসার বাজমির ১০টি করে তিন দিনে মোট ৩০টি গান রেকর্ডের পর রুনা লায়লা নাম লেখান গিনেস বুকে। ১৮টি ভাষায় গান গাওয়া, নিজের সংগীতজীবন নিয়ে নির্মিত ‘শিল্পী’ ছবিতে অভিনয় করা- এসব মিলিয়ে রুনা লায়লা হয়ে ওঠেন উপমহাদেশের অন্যতম সংগীত কিংবদন্তি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৭
বিএসকে/জেডএম