পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সুইডেন সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা সিডার অর্থায়নে গৃহীত নতুন প্রকল্প বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পরিবেশ অধিদপ্তরে ‘স্ট্রেংদেনিং ক্যাপাসিটি অব এমওএফইসিসি, ডিওই, অ্যান্ড বিএফডি ফর ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্রুভড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুদান চুক্তি নেওয়ার সময় তিনি একথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নত হবে। প্রকল্পটি পরিবেশগত ও জলবায়ু সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনী পদক্ষেপের মাধ্যমে কাজ করবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার উন্নত তদারকি, বৃহৎ পরিসরে পরিবেশ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম এবং দেশের প্রথম ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে অনুদান চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্বে) ড. এ. কে. এম. শাহাবুদ্দিন এবং ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও সহযোগিতা প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব লুবনা ইয়াসমিন এবং সহযোগিতা বিভাগের উপপ্রধান ও ফার্স্ট সেক্রেটারি নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম।
সিডার অনুদানে ৫০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ব্যয়ে পরিচালিত এ প্রকল্প তিনটি প্রধান উপাদানের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হবে। প্রথমত, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে, যার আওতায় জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর অংশ হিসেবে তৈরি হবে নজরদারি পরিকল্পনা, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নে বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর দূষণ পর্যবেক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ।
দ্বিতীয়ত, সোনাদিয়া দ্বীপসহ গুরুত্বপূর্ণ ইসিএ এলাকাগুলোর উন্নত তদারকি ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ লক্ষ্যে চালু হবে ম্যানগ্রোভ বন পুনঃস্থাপন, বালিয়াড়ি স্থিতিশীলকরণ, কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন ও প্রাথমিক পরিবেশগত মূল্যায়ন। এই কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গঠন করা হবে ভিলেজ কনজারভেশন গ্রুপ, যারা টেকসই জীবনযাপন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য কাজ করবে।
তৃতীয়ত, প্রকল্পের আওতায় গঠিত হবে একটি ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’। এর জন্য একটি বিস্তৃত স্কোপিং স্টাডি ও অংশীজন পরামর্শের মাধ্যমে টেকসই অর্থায়নের পথ তৈরি করা হবে, যা বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ ও মানব-প্রাণী দ্বন্দ্ব হ্রাসে সহায়ক হবে এবং সরকারী বাজেটের ওপর নির্ভরতা কমাবে।
এসকে/এমজেএফ